আবেদনের ৭ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ

Slider বাংলার সুখবর


ঢাকা: আবেদন করার সাত দিনের মধ্যে আবাসিক গ্রাহককে ও সর্বোচ্চ ২৮ দিনের মধ্যে শিল্পকারখানায় হাই ভোল্টেজের বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হবে। এর ব্যত্যয় যাতে না হয় তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ গত ২৪ ডিসেম্বর এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বলা হয়, আবেদন করার সাত দিনের মধ্যে আবাসিক গ্রাহককে বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় আবেদনের সঙ্গে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ‘আবাস সনদ’ না পেলেও তাঁকে সংযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া হাই ভোল্টেজের বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্তগুলো সহজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে সেবা সহজ করতে বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত তথ্য গ্রাহকের মুঠোফোনে খুদে বার্তায় (এসএমএস) পাঠানো ও ই-মেইলে মাসিক বিল পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে সহজে বিলের তথ্য জেনে যাবেন গ্রাহক। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর দুই বিতরণী সংস্থা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এলাকায় এ পদ্ধতিতে বিলের তথ্য দেওয়া হবে।

বৈঠক সূত্র আরও বলেছে, শীতকালে যেসব বাণিজ্যিক গ্রাহক বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন, তাঁদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার কথাও ভাবছে সরকার। সারা দেশে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে শীত মৌসুমে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ৬ হাজার মেগাওয়াটের নিচে নেমে আসে। ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও এ সময় বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় না। ফলে অনেক কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়। অথচ উৎপাদন না করলেও বন্ধ থাকা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্র ভাড়া দিতে হয়। কেন্দ্র ভাড়া বাবদ এই লোকসান কমিয়ে আনতে শীতকালে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারের উপায় খোঁজা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৭ হাজার ৬৮৫ মেগাওয়াট।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শিল্প খাতের হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা যায় কি না, সে জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো আলোচনা করবে। বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস এ বিষয়ে বলেন, ‘মানুষ যাতে সহজে সেবা পেতে পারেন, সে জন্য বিতরণ সংস্থাগুলোকে আমরা বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। সেবা সংস্থাগুলোতে গিয়ে মানুষ যেন হয়রানিতে না পড়েন এবং এসব নির্দেশনা তারা পালন করছে কি না, তা আমরা তদারক করব।’

‘আলোর ফেরিওয়ালা’ কার্যক্রম চলছে

২৪ ডিসেম্বর থেকে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শেখ আবদুর রহমান ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ নামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। রিকশাভ্যানে মিটার, বিদ্যুতের তারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহককে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার এ কার্যক্রম ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ৩ জানুয়ারি প্রথম আলোয় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এটিকে মডেল হিসেবে নিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে এমন কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী রিকশাভ্যানে করে পাঁচ মিনিটে বিদ্যুৎ-সংযোগ কার্যক্রম শুরু করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো।

এদিকে ৮ জানুয়ারি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের আলোর ফেরিওয়ালা কার্যক্রমটি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *