জালভোটে নজরদারি রাখবেন, ডোন্ট অ্যালাও ইট: রফিকুল ইসলাম

Slider বাংলার সুখবর


ঢাকা: জালভোটে নজরদারি রাখার তাগিদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন ডোন্ট এলাই ইট। একইসঙ্গে প্রকাশ্যে ভোট দেয়া বেআইনী বলেও মনে করিয়ে দেন তিনি। আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সরকারী কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণে এসব কথা বলেন তিনি।

মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা কাউকে ব্যালট পেপার দিয়ে দিলেন ওনি গোপন কক্ষে না গিয়ে প্রকাশ্যে ভোট দিলেন। আমার ভোট আমি প্রকাশ্যে দিয়েছি অসুবিধিা কি? একথা অনেকেই বলতে পারেন। যেহেতু আইনে এটা পারমিট করে না। আপনারাও অ্যালিউ করবেন না। আপনাদের প্রশিক্ষণার্থীকেও (প্রিজাইডিং, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার) বলবেন- ডোন্ট অ্যালাউ ইট। কারণ এ ধরণের কর্মকান্ড বেআইনি এবং এ ধরণের কর্মকান্ড নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন প্রত্রিকা টেলিভিশনে আমরা দেখতে পাই-একজন ভোটার এসে বলতেছে আমার ভোটটা দেয়া হয়েছে গেছে।
যদি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা ঠিকমত তার কাজটা করেন। তাহলে একজনের ভোট আরেকজনের দেয়ার কথা নয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইনে যেহেতু ভোট দেয়া হয়ে গেলো, ভোট দেয়ার কিন্তু বিধান আছে। যদি আপনি স্যাটিসফাইড হন, সে সত্যিকার অর্থে ভোটার, তার ভোটটা অন্য কেউ দিয়ে গেছে। জাস্ট অ্যালাউ হিম উইদাউট এনি কোয়েশ্চেন। আপনারা যদি আইনটাকে ফলো করেন। তাহলে আর নির্বাচনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, আসলে দেখবেন নির্বাচন মানেই কিন্তু একদিন। সিডিউলে ৪৬-৪৫ দিন বা যতদিনই থাকুক না কেনো নির্বাচন মানে একদিন, মানে সেই নির্বাচনের দিন। এই নির্বাচনের দিন কি হলো- এটা যদি ঠিক না হয়, এটা যদি আইনানুগ না হয়, তাহলে কিন্তু আমরা সবাই প্রশ্নবিদ্ধ হবো। কারণ ওই নির্বাচনের দিনই ভোটার আপনাদের সঙ্গে আমার নির্বাচনি কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকটা পত্রিকা খুললেই একটাই কথা, সবার ভিতরেই শঙ্কা ভোট দিতে পারবেন কি না। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা। আশঙ্কার কথা যদি বারবার বলা হয় ভোট দিতে পারবেন কি না। এই জিনিসটুকু আপনাদের ওপর নির্ভর করে। কারণ আপনি যদি ব্যালটটাকে ঠিকমত সংরক্ষণ করেন, কেন্দ্রটাকে ঠিকমত তৈরি করেন, আপনার দায়িত্ব এবং আপনি যাদের ট্রেইনিং দেবেন তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করেন। কারণ আপনার কাছে ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে। ঠিক মতো যদি আইডিন্টেফিকেশন হয়। যদি আপনারা কাউকে জোড় করে বের করে না দিয়ে এজেন্টদের ঠিকমত রাখেন। তাহলে কোনোক্রমেই একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। তাহলে প্রত্যেকের ভোটাধিকার আপনার কেন্দ্রের ভেতর নিশ্চিত করতে হবে। আপনার দায়িত্ব কিন্তু এটুকুই। ঠিকমতো তাকে আইডেন্টিফিকেশন করা, আইন অনুসরণ করে ব্যালট পেপার প্রদান করা এবং ব্যালট প্রদান করার পরে তাকে দিয়ে গোপন কক্ষে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং তিনি যেনো আর দ্বিতীয়বার ভোট দিতে আসতে না পারেন তার জন্য ওনার আঙুলে কালো কালী দিয়ে চিহ্নিত করা।

কোনো ভোটারকে চিহ্নিত না করা পর্যন্ত তাকে ভোট দিতে ব্যালট পেপার দেবেন না। এগুলো যদি আপনারা করতে পারেন, তাহলে কোনোভাবেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।
রফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা যদি কাজগুলো করতে পারেন তাহলে, আমরা কি ভোট দিতে পারবো নাকি আগেই আমার ভোটটা দেয়া হবে এই শঙ্কা কি থাকতে পারে? এই শঙ্কাটা কি থাকতে পারে যে, আমি কেন্দ্রে গিয়েও ভোট দিতে পারবো না কি না।

তিনি বলেন, কেন্দ্রে আসতে পারবে কি না, কেন্দ্রে গেলে তো ভোট দেবো এ রকমও প্রশ্ন আসতেছে। এটা আপনাদের বিষয়টা না। এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আছে। দরকার হলে আমরা আরো ব্যবস্থা নেবো যাতে করে ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন। তারপরও যদি কোনো এক্সিডেন্ট হয়, তাহলে আপনাদেরকে কথা দিতেছি আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবো।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আপনাদের নিরাপত্তার জন্য চিন্তা করবেন না। একেবারে চৌকিদার থেকে সেনাবাহিনীর কেউ বাদ থাকবে না। নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সবাইযুক্ত থাকবেন। আপনাদের দু:শ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, আপনাদের জীবন, মালামাল নিয়ে।

শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখবেন। আপনার অনুমতি ছাড়া তারা যেন কোথাও যেতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে নির্বাচন করেন আপনারা। নির্বাচনের প্লানিং করে নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয়। আমাদের মান সম্মান ইজ্জত আপনাদের হাতে ন্যাস্ত। নির্বাচনের সব দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন।

নির্বাচনের মালামাল গ্রহণের সময় সবকিছু আপনারা বুঝে নিবেন। এটা কিন্তু আইনে বলা নাই। তারপরও মালামাল, ব্যালট সবকিছু দেখে গ্রহণ করবেন। এমনও তো হতে পারে সেখানে ব্যালটের পরিবর্তে সাদা কাগজ চলে আসল। সেজন্য সবকিছু আপনারা বুঝে নিবেন। এগুলো আপনাদের দায়িত্বে থাকবে। আপনারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কারও কাছে এগুলো রেখে কোথাও যাবেন না। তারাও ব্যালটের অপব্যবহার করতে পারে, যদিও তারা তা করবেন না। তারপরও আপনি সার্বক্ষণিক এগুলোর সাথে থাকবেন। কারণ এগুলো নেয়ার সময় আপনি (প্রিজাইডিং অফিসার) স্বাক্ষর করে নেবেন। তাই এর দায় দায়িত্বও আপনার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *