গাজীপুরে চার বছরেও কার্যকর হয়নি আসামীর চাকুরীচ্যুতি!, আতঙ্কে গৃহশিক্ষক আনোয়ারা

Slider নারী ও শিশু

গাজীপুর: প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করায় সৃষ্টি হয়েছে তিনটি মামলা। আর ওই সকল মামলার ঢেউ গিয়ে পড়েছে সরকারী চাকুরীজীবী এক বরের অফিসে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ হওয়া সত্বেও চার বছরেও কার্যকর হচ্ছে না চাকুরীচুত্যির নির্দেশ। ফলে সরকারী চাকুরীর প্রভাবে ন্যায় বিচার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এক হতভাগী নারীর।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর শহরে।

জানা যায়, গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবীথীতে বসবাস করেন আনোয়ারা খাতুন(২৮)। জনৈক ঘটকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয় জনৈক মোঃ আঃ হেলিমের সঙ্গে। আঃ হেলিম গাজীপুর পুলিশ সুপার অফিসে উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত। সেই থেকে তিনি এখনো একই স্থানে চাকুরী করছেন।

বিয়ের পর জানা যায়, হালিমের প্রথম স্ত্রী আছে। সেই ঘরে ২টি পুত্র সন্তানও রয়েছে। এই নিয়ে আনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে প্রায়ই বিবাদ সৃষ্টি হত। এরপর হেলিম, দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারাকে মারধর ‍শুরু করে। এক পর্যায়ে হেলিম, আনোয়ার নিকট ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেন। আনোয়ারা গরীব মানুষ হওয়া টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এই নিয়ে হালিম-আনোয়ারার মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠায় আনোয়ারা খাতুন ২০১৩ সালে গাজীপুর আদালতে হেলিমের বিরুদ্ধে যৌতুক দাবীর মামলা করেন। মামলার পর হেলিম পুলিশ দিয়ে নানা ভাবে তাকে হয়রানী করে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দেয়। অতঃপর আনোয়ারা খাতুন হেলিমের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে আকেরটি মামলা করেন আদালতে। এরপর হেলিমের অত্যাচার আরো বেড়ে গেলে আনোয়ারা খাতুন ন্যায় বিচারের জন্য পারিবারিক আদালতে আরো একটি মামলা করেন। তিনটি মামলাই বর্তমানে বিচারাধীন।

এদিকে বিচারাধীন মামলায় প্রভাব খাটিয়ে সকল মামলা তুলে নেয়ার অপচেষ্টা করায় আনোয়ারা খাতুন পুলিশের উর্ধ্বতন মহলে অভিযোগ দায়ের করেন হেলিমের বিরুদ্ধে। একাধিকবার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৮ জুন গাজীপুরের তৎকালিন পুলিশ সুপার মোঃ আঃ বাতেন পিপিএম গাজীপুর পুলিশ অফিসে কর্মরত কর্মচারী আঃ হেলিমকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে বিভাগীয় মামলা রুুজর জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠান। কিন্তু আজ পর্য়ন্ত কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

আনোয়ারা খাতুনের অভিযোগ, তার আসামী আঃ হেলিমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন আদেশ চার বছরেও কার্যকর না হওয়ায় তিনি বিচারাধীন মামলায় আদালতে নিয়মিত যেতে পারছেন না। সব সময় তিনি নিরাপত্তা আতঙ্কে রয়েছেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আনোয়ারা খাতুন আসামী হেলিমকে চাকুরী হতে অব্যাহতি দিতে সরকারের প্রতি জোর আবেদন করেছেন।

বর্তমানে আনোয়ারা খাতুন গৃহশিক্ষকরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন আর আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছেন ন্যায় বিচারের আশায়।

এ বিষয়ে আঃ হেলিম বলেন, এই সব বিষয় নিস্পত্তি হয়ে গেছে। মামলা মোকদ্দমাও শেষ হয়ে গেছে।

আনোয়ারা খাতুনের আইনজীবী এডভোকেট শিউলি আক্তার বলেন, হেলিমের বিরুদ্ধে আনোয়ারা খাতুনের দুটি মামলার রায় হয়েছে। একটি চলমান। তবে ওই দুটি মামলারও আপিল চলছে। মানে তিনটি মামলাই বিচারাধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *