বনখেকো জসিমের ভয়ানক ইতিহাস তদন্তের দাবী ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলনের

Slider ঢাকা বাংলার মুখোমুখি

গাজীপুর: ৩০০ বিঘা বনের জমি দখল করে গ্রাম গড়ে তোলার নায়ক জসিম ইকবাল উরফে মুচি জসিমের উত্থান এবং নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জসিমের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেছে ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন।

আজ এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, জসিম ইকবাল প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বনের জমি দখল করে নিজের নামে গ্রাম গড়ে তোলেন। গণমাধ্যমে জসিমের সাথে বিভিন্ন কর্মকর্তার ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জসিমের লাশ কাপাসিয়ার জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলছে. দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গুলিবিনিময়ের কারণে জসিম নিহত হয়েছেন। জসিমের পরিবার বলছে, মৃত্যুর আগে গাজীপুর ডিবি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। ফলে জসিমের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল তৈরী হয়েছে।

সংগঠন বলছে, জসিম খুনের ঘটনায় কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করা উচিত। কারণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত অসংখ্য ছবি বলছে, জসিমের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতারা প্রশাসনের লোক হতে পারে। প্রমান লোপাটের জন্য না অন্য কোন কারণে কে বা কারা জসিমকে হত্যা করেছে তা উদঘাটন জরুরী। একই সঙ্গে জসিমের সহযোগিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে গাজীপুরে বন বিভাগের জবরদখলকৃত সমস্ত সম্পত্তি উদ্ধার করার দাবী জানিয়েছে ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন।

প্রসঙ্গত: গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বনখেকো, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী জসীম ইকবালের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেল গভীর বনের ভেতরেই। মাথা, বুক আর হাতের বাহুতে রয়েছে গুলির চিহ্ন। লাশের পাশে পড়ে ছিল রক্তাক্ত একটি বিদেশি পিস্তলও। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ভুলেশ্বর নেতারটেক এলাকার গভীর বন থেকে গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে ১৬টি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি জসীমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে কালিয়াকৈরবাসীর আতঙ্ক জসীমের লাশ হস্তান্তর করা হয়। তবে বন বিভাগের জায়গায় তার কবর খোঁড়া হলেও বন বিভাগ ও স্থানীয়দের বাধায় তাকে দাফন করা যায়নি। তার লাশ গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জে নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রার জোড়া পাম্প এলাকা থেকে জসীমকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একদল যুবক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছিল তার পরিবার। তবে জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের ওসি আমির হোসেন পরিবারের দাবি অসত্য উল্লেখ করে বলেন, ডিবি পুলিশের কোনো সদস্যের হাতে জসীম গ্রেফতার হয়নি। তা ছাড়া ডিবি পুলিশের কোনো টিম ওই দিন কালিয়াকৈরে অভিযানেও যায়নি।

জসীমের সহযোগী এ বি সিদ্দিক বাবু বলেন, স্থানীয় দোকানিরা দেখেছেন কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে জসীমকে তুলে নিয়ে গেছে অজ্ঞাতরা। গাড়ির সামনে ডিবি পুলিশ লেখা একটি স্টিকার ছিল।

বনের ৩০০ বিঘা জায়গা দখল করে নতুনপাড়া নামের গ্রাম গড়ে তোলার মূল হোতা জসীমকে গ্রেফতারের খবরে রাতেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নেমে আনন্দ মিছিল করে। পাড়া-মহল্লায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *