জিম্মি শহীদ তাজউদ্দীন-৪: সেবাকর্মীদের ঘামের টাকায় দুই নেতার বহুতল ভবন

Slider গ্রাম বাংলা টপ নিউজ বাংলার মুখোমুখি

গাজীপুর: শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবাকাজে নিয়োজিত বেকার যুবকদের পরিশ্রমকে পুঁজি করে আউট সোর্সিং ব্যবসার মাধ্যমে দুই নেতা বড় বড় দালান তৈরী করছেন। ওই সব দালান নির্মান এখন চলমান। সরকার নির্ধারিত লোকবলের পারিশ্রমিকের টাকা নিয়ে কম/বেশী লোক খাটিয়ে ও কর্মরতদের পারিশ্রমিক কম দিয়ে তারা কোটি কোটি টাকা নিচ্ছেন অনেক দিন থেকেই। মন্ত্রী ও এমপিদের নাম ভাঙিয়ে ওই সব মানুষী ঠিকাদার বড় লোক হলেও কেউ কোন কথা বলেন না।

অজ্ঞাত কারণে দেখভাল করার লোকগুলোর মুখে কৃত্রিম তালা থাকায় অপরাধ চলছে নিরাপদে। আর নিজেদের পারিশ্রমিক যথাযথভাবে না পেয়ে ও আউট সোর্সিং ব্যবসায় দূর্নীতি দেখে নিজেরাও ফাঁকিবাজী হয়ে যাচ্ছেন আউট সোর্সিং কর্মীরা। ফলে সেবাকাজে সৃষ্টি হচ্ছে চিরায়ত বিঘ্নকারী নানা ইভেন্ট। এই লাভজনক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তৈরী করা হয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে যুক্ত আছেন, সরকারী ও বেসরকারী লোক, রাজনৈতিক নেতা, মাস্তান ও কতিপয় সংবাদকর্মী।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজে দৈনিক কাজ করার জন্য মজুরী ভিত্তিক ১০২ জন লোক কাজ করার কথা। কিন্তু কাজ করছেন দেড়শর এর বেশী বলে, বলা হলেও বাস্তবে ৭০/৮০ জন দেখা যায়। প্রত্যেকের মাসিক মুজরী ৮ হাজার না ১৬ হাজার টাকা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তারা পাচ্ছেন ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। স্থানীয় দুই নেতা ওই আউট সোর্সিং নিয়ন্ত্রন করেন। তারা শ্রমিকদের নিয়োগ ও মজুরী দেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবলের বিপরীতে কম/বেশী সংখ্যক লোকবল নিয়োগ করে বিশৃঙ্খলা তৈরীর মাধ্যমে কথিত পারিশ্রমিক দিয়ে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শ্রমিকদের ঘামের টাকা লুট করে বর্তমানে ওই দুই নেতা বহুতল ভবন নির্মান করছেন বলে দেখা যায়।

তবে এই মুজরী নিয়ে ধুম্রজাল আছে। আউট সোর্সিং কর্মীর মাসিক মজুরী কত! এই প্রশ্নের জবাবে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেলের পরিচালক ডা: আলী হায়দার খান গ্রমাবংলানিউজকে বলেন, মাসিক মজুরী কত দেখে বলতে হবে। তবে ঠিকাদার পলাশকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন বলে তিনি জানান।

স্থানীয়রা বলছেন, ওই দুই নেতা মন্ত্রী ও এমপিল লোক বলে পরিচয় দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করলেও তারা কেউ মন্ত্রী বা এমপিল লোক নয়। নাম ভাঙিয়ে তারা শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজে সেবা কাজকে ব্যহত করে নিজেরা কোটিপতি হচ্ছেন।

গোপন সূত্র বলছে, দুই নেতা এই কাজের জন্য গড়ে তুলেছেন বিশাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে সরকার-বেসরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, মাস্তান ও কতিপয় সাংবাদিকও রয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে ওই লাইনেই শায়েস্তা করা হয়। ফলে মাঝে মাঝে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেলে সংবাদকর্মীর উপরও আক্রমন হয়। ইদানিংকালে এই ধরণের একটি ঘটনায় প্রতিবাদে সাংবাদিকেরা মাঠে নামে। কিন্তু কর্মসূচির দিন সিন্ডিকেট নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত করতে সক্ষম হন।

সূত্র জানায়, শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেলের আউট সোর্সিং, ঔষুধ ও খাদ্য সরবরাহ, কাপড়চোপড় ও পরিচ্ছন্নতার কাজ সহ চিকিৎসার নামে রোগীদের জিম্মি করে বানিজ্য এখন রমরমা। এই সকল কাজ করার জন্য তৈরী সিন্ডিকেটটি শুধু আপডেট হয় তখন, যখন সরকার পরিবর্তন হয়।

চলবে–

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *