ঢাকা: আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
আজ শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাইকোর্টের আদেশ ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই আবেদনটি অকার্যকর হয়ে গেছে।
এ সময় অপর পক্ষের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, শহিদুল আলমকে নির্যাতনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে (হাইকোর্ট) স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সে আদেশ এখনো প্রতিপালন করা হয়নি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিষয়টি হাইকোর্টের।
সারা হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আদালতের নজরে আনলাম।’
আদালত বলেন, চাইলে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনতে পারেন।
পরে আদালত আদেশ দেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে শহিদুল আলমকে তুলে নেয় ডিবি। তবে শহিদুল আলমকে আটকের পর নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা নিয়ে এবং চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ ৭ আগস্ট একটি রিট করেন।
রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হাইকোর্ট এক আদেশে শহিদুল আলমের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে অবিলম্বে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে পাঠাতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি রাখেন আপিল বিভাগ।
৮ আগস্ট শহিদুলকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে আবারও গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শহিদুলের শারীরিক অবস্থা ভালো বলে হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড মত দিয়েছে।
সাত দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল রোববার শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।