ঢাকা: সময়টা এখন ‘ভালো নয়’ মন্তব্য করে সরকারের মন্ত্রী এবং দলীয় নেতাদের ‘ভাষণ না দিয়ে কাজে মন’ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের একটি উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মন্ত্রীরা বিদেশ যেতে চায়। নেতারা কথা বেশি বলে, কাজ তেমন করে না। বর্তমান নেতাদের বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তি স্মরণ করার অনুরোধ করছি। আমি আশা করি, আমাদের সরকারি পদে আমরা যারা মন্ত্রী আছি, আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত, যারা নেতারা আছেন, ভাষণ না দিয়ে কাজের দিকে মনোযোগ দিন।
বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কাদের বলেন, সময়টা ভালো নয়। আমি আমাদের নেতৃবৃন্দের কাছে, আমার সহকর্মীদের কাছে বিনীত অনুরোধ করব, যার যার সীমানা পেরিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেবেন না। সরকারকে বিব্রত করে- এমন বক্তব্য কেউ দেবেন না। দল, সরকার বিব্রত হয় এমন কোনো কথা দয়া করে বলবেন না। সহকর্মীদের ‘হোমওয়ার্ক’ করার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পলিসির ব্যাপারে নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে কথা বলবেন, ফ্রিস্টাইল কথা বলা যাবে না। কেবল পোস্টার ব্যানার ফেস্টুনে ছবি দিয়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে নিজের ছবি দিয়ে আত্মপ্রচার বন্ধ করতে হবে। এই ছবি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে আত্মপ্রচারে যারা নিমগ্ন তাদের রাজনীতির কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন আছে। একজন এমপি, তার বাড়ি ঢাকা থেকে অনেক দূরের একটি দ্বীপে, তিনিও ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর পাশে ছবি দিয়ে পোস্টার বিলবোর্ড করেছেন। কেন? যারা বাইরে তারা এখানে কেন ছবি দিচ্ছেন? এটা কি তাদের নির্বাচনী এলাকা? প্লিজ এইসব প্র্যাকটিস বন্ধ করুন। পোস্টারের ছবি দেখিয়ে শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না মন্তব্য করে কাদের বলেন, নমিনেশন পাওয়া যাবে জনগণের সেবা করে, জনগণের মন জয় করে এটা আমি স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই।
দেশের রাজনৈতিক চিত্র ‘অতি দ্রুত’ বদল হবে- বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কীভাবে বদল হবে? কেন বদল হবে? কি কারণে বদল হবে? মওদুদ সাহেবের কী ম্যাজিক আছে যে ম্যাজিক দিয়ে তিনি রাজনীতি বদল করবেন। জনগণের রায়ের বাইরে গিয়ে অন্য কোনো উপায়ে ক্ষমতা বদলের ‘খোয়াব’ দেখলে তা অচিরেই ‘কর্পুরের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।’
শর্ত আরোপ করে কোনো সংলাপ হয় না: ওদিকে পৃথক স্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপ হতে হয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে। কিন্তু বিএনপি সব কিছুতে শর্ত আরোপ করে বসে। সংলাপের বিষয়ে কোনো পূর্ব শর্ত থাকতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ফোন করলে বিএনপি মহাসচিব ফিরতি ফোন করবেন এটা তো কোনো রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের কথা নয়। রাজধানীর কাওলায় এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে ‘বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সংলাপ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না’ এমন প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) আমাকে তো কখনো ফোন দেননি। তিনি যখন অসুস্থ হয়েছিলেন তখন আমি তাকে ফোন দিয়ে তার খোঁজখবর নিয়েছি। তার সঙ্গে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আমার দেখা হয়েছিল। আমি নিজে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি। যদিও তিনি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছিলেন।