তাসলিমা আক্তার,
সামাজিক যোগোযাগ সঙ্গী
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা: নেপোলিয়ন বলেছেন,“আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব”।
একটি শিশুর জীবন গঠনে যত গুলো চাহিদা আছে তার মধ্যে সব চেয়ে জরুরি হল শিক্ষা। এটি পূরণ করার জন্য যাদের ভূমিকা সব চেয়ে বেশি, তারা হল তার মা বাবা যারা শিশুটির অভিবাবক হিসেবে পরিচিত।
অভিবাবকেরা একটি শিশুকে যেই আদর্শ দিয়ে বড় করবেন শিশুটি সেই আদর্শে অনুপ্রানিত হবে এবং পরবর্তী জীবনে ওই আদর্শেই বড় হবে। বাবা-মায়ের আদর্শে লালিত শিশুটি পরবর্তীতে সুন্দর জীবন গঠন করবে। পরিবারের একটি লোকও যদি উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করেন তবে ওই পরিবারের সন্তান ভাল হবে এমনকি মনে করা উচিত নয়। সাম্প্র্রতিক সময়ে দেখা গেছে, অনেক পরিবারের মধ্যে কলহ-বিবাদ লেগেই থাকে। সারাদিন অনৈতিক আচরণ দেখতে দেখতে শিশুরা অভ্যস্থ হয়ে গেলে বিপদগামী হয়ে যায়। পারিবারিক শ্রিষ্ঠাচার, নৈতিকতাবোধ ও ভাল রীতি-নীতি শিশুর মানষিক বিকাশে সহায়ক। তাই আমাদের অভিবাবকদের উচিত হবে ভবিষৎ প্রজন্মের উজ্জ্বল জীবন কামনায় ক্ষুদ স্বাথ পরিত্যাগ করে শিশু বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা। না হয় ভবিষৎ বিপদের মধ্যে পড়বে এটি নিশ্চিত।
তাই একটি সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে অভিবাবকের ভূমিকা অবশ্যই স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন হওয়া উচিত। শিশুকে সঠিক শিক্ষা গ্রহনে সহায়তা করে অভিবাবকরাই- পারে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই প্রধান করে কিন্তু প্রকৃত শিক্ষাটা আসে অভিবাবক থেকে।
একজন সন্তান কে পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রধান করতে নিচের বিষয় গুলোর প্রতি নজর দেয়া উচিত।
১) পড়াশোনার ব্যাপারে সবসময় খোজ খবর রেখে সহায়তা করে।
২) স্কুলে গিয়ে কোন ধরনের ছেলে মেয়েদের সাথে মেলামেশা করছে তার দিকে নজর রাখা উচিত।
৩) ছেলে মেয়েদের কখন কোন জিনিস টা কতটুকু পরমানে দরকার তার ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত। সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না হলে না দিয়ে পরিস্থিটা তাকে বুঝিয়ে বলা উচিত।
৪) সবসময় শাসন না করে বন্ধু সূলভ আচরন করা উচিত।
৫) তাদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিকতার যে পরিবর্তন আসে তার দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৬) আজকাল অভিবাবকদের তাদের সন্তানদের নিয়ে ৩-৪টি কোচিং সেন্টারে পড়ানোর প্রবণতা বেশি। এই প্রবনতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সন্তানদের পাঠ্য বই পড়তে আগ্রহী করতে হবে।
৭) তাদের মানসিক চাপ প্রয়োগ না করাটাই উচিত। যেমন তোমাকে প্রথম হতেই হবে, এ+ পেতেই হবে ইত্যাদি। সময়ের সাথে। সে নিজেই বুঝে যাবে কখন কি করা উচিত।
৮) সবার পড়ার ও বোঝার পদ্ধতি ক্ষমতা এক হয় না। তাই তাঁদের মত করে পড়তে দেয়া উচিত।
৯) আজকাল প্রশ্ন ফাঁশ নিয়ে নানা ধরনের গুঁজব শুনতে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে অভিবাবকরাই পারে এই সর্বনাশ থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে। তাঁদের কে নৈতিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এগুলু থেকে দূরে রাখতে হবে।
১০) শিক্ষা ক্ষেত্রে অনৈতক কর্মকাণ্ড যেমন ( নকল, প্রস্নপত্র ফাঁশ, বিভিন্ন ডিবাইস ব্যাবহার ইত্যাদি) থেকে দূরে রাখতে অভিবাবক প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে।
লেখক: শিক্ষিকা, শিশু বিকাশ
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, গাজীপুর