স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য দায়িত্ববোধ জরুরি : গভর্নর

অর্থ ও বাণিজ্য

400-1418201721বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য দায়িত্ববোধ জরুরি। পরিবেশ ও সমাজ গঠনের জন্য সমাজের সব খাতের প্রতিনিধিদের কার্যক্রমে দায়িত্ববোধ বজায় থাকতে হবে।

এশিয়া ও ওসেইনিয়া ইউনাইটেড ন্যাশন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট লোকাল নেটওয়ার্ক রিজিওনাল মিটিংয়ে তিনি একথা বলেন। বুধবার রাজধানীতে লেকশোর হোটেলে এর আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হান্নে ফুগাল ইস্কার ও জিসি’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ফারুখ সোবহান মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

গভর্নর উদাহরণ টেনে বলেন, ‘সাভারে রানা প্লাজা ধস, তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ড দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মিলেছে দায়িত্বহীনতার পরিচয়। এজন্য শিল্প ও বাণিজ্য খাতে আমাদের আরো দায়িত্ববান হতে হবে।’

ড. আতিউর বলেন, ‘বস্ত্র ও পোশাক খাত আমাদের লাইফ লাইন। বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়া এটি চলে না। তাই বিদ্যুতের অপচয় ও পানি দূষণ রোধে পরিবেশবান্ধব রিস্ক ম্যানেজমেন্ট নীতিমালা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘নীতিমালা হলে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে আনা ও পানি দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে। এতে উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে।’

আতিউর রহমান আরো বলেন, ‘ব্যবসা বাণিজ্য দেশের দারিদ্র দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এজন্য যে যেই সেক্টরে কাজ করি না কেন, প্রত্যেককেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে। এতে  শুধু দারিদ্র্য দূরীকরণই নয়, শিল্প ও বাণিজ্য খাতে উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক উন্নয়নে টেকসই ভূমিকা রেখে চলেছে। শুধু আন্ত:ব্যাংকিং সেবাই নয়, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে সরল আর্থিক নীতির প্রচলন করেছে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সভা সেমিনারসহ আলোচনার পথ খোলা রেখেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা কিভাবে বাড়ানো যায় তার উপায় খুঁজে বের করা।’

ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের মনমানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের এখন প্রয়োজন সামাজের প্রতিটি খাতে দায়িত্ববান লিডার বা প্রতিনিধি।’

গওহর রিজভী বলেন, ‘বিশ্ব ধীরে ধীরে হলেও বাংলাদেশের একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। তবে উন্নত মান এবং দক্ষ জনশক্তির আরো প্রয়োজন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিশ্বের অনেক দেশ এখন আগ্রহ প্রকাশ করে। আমাদের শুধু প্রয়োজন পরিবেশ তৈরি করা। শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা তৈরিতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রতিটি খাতের প্রতিনিধিকে এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি ছাড়া একটি দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে ওঠে না। আমাদের ভিত্তি গড়ে উঠেছে, এখন প্রয়োজন এটাকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দেওয়া। তাহলেই ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।’

হান্নি ফুগল বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘দ্রুত উন্নয়নের একটি রোল মডেল হতে পারে বাংলাদেশ। একটি উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার জন্য যা দরকার, তা বাংলাদেশের রয়েছে। এজন্য আমার নিজের দেশসহ অনেক দেশ বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *