বিশেষ প্রতিবেদন: ভোট বিহীন গণতন্ত্র আবিস্কার হউক!

Slider টপ নিউজ সম্পাদকীয় সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

36188936_10213574180603616_713568443537817600_n

২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ও ২০১১ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ভিকটিম হিসেবে খুব কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। ২০১৬ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন সহ সাংবাদিকতার ১৯ বছরে অসংখ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষন করেছি। এই পেশায় থাকলে ও সৃষ্টিকর্তা বাঁচিয়ে রাখলে হয়ত আরো নির্বাচন দেখা ভাগ্যে জোটতে পারে। তবে সব মিলিয়ে মনে হয়, গনতন্ত্রে ভোট এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে যাচ্ছে। যে দল সরকারে থাকে ওই দলের বিপরীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করা, প্রার্থী ও ভোট সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য যেমন ঝুঁকিপূর্ন, তেমনি ভোটারদের জন্যও আতঙ্কের কারণ। গনতন্ত্রে ভোট হবে উৎসবের কারণ। কিন্তু সময়ের কারণে ভোট গনতন্ত্রের জন্য এখন আতঙ্ক ও ভয়ের কারণ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।

পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, ভোট উৎসবে ভোটার খুন হয়। ভোট উৎসবে ভোটার গুম হয়। ভোট উৎসবে ভোটার গ্রেফতার হয়। ভোট উৎসবে ভোটার ও তার পরিবার নিরাপত্তা আতঙ্কে পড়ে যায়। ভোট উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে ভোটার কেন্দ্রের বাইরে ও ভেতর থেকেও আটক হয়। ভোট উৎসবে ভোটার নিঁখোজ হয়। নিঁখোজের পর বেশ কিছু সময় পর দূরের রাস্তায় বা অন্য কোন জেলার হাজতে বা কারাগারে পাওয়া যায়। ভোট উৎসবে সংঘর্ষ হয়, রক্ত ঝরে। ভোট উৎসবে ভোটার অপমানিত হয়। তাই এখন আর ভোট, উৎসব হিসেবে আসে না। ভোট এখন আতঙ্ক ও ভয়ের কারণ হিসেবে সামনে আসে।

একটি ভোটে রাষ্ট্রীয় অনেক টাকা খরচ হয়। ওই টাকা ভোটারদের টাকায়। ভোটারদের টাকায় অনুষ্ঠিত ভোট উৎসব যখন ভোটারদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন ভোট তার প্রয়োজনীয়তা হারিয়ে শত্রু হয়ে যায়। তাই ভোট গনতন্ত্রের জন্য এখন আতঙ্কের কারণ। যাদের টাকায় ভোট হয়, ভোট তাদেরকে মেরে ফেলে বা অপমান করে বা হয়রানী করে। তাই ভোট দিন দিন অন্য রুপ ধারণ করে ভীতির কারণ হয়ে যাচ্ছে।

যে সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দেয়, সে সরকার সব সময় বলে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সরকারী দলের প্রার্থী বিজয়ী হলে বিরোধী দলীয় প্রার্থী ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আবার সরকারদলীয় প্রার্থী ভোটকে স্বচ্ছ বলে। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যে হারিয়ে যায় ভোটের আসল চিত্র।

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট বলছে, ভোট গনতন্ত্রের মূল উপকরণ, যা উৎসব আকারে উদযাপিত হবে। কিন্তু সেই ভোট এখন ভয়ের কারণ। টিকিয়ে রাখার জন্য আসা ভোট এখন গনতন্ত্রকে হুমকি দিচ্ছে এটাই মনে হয়। তাই গনতেন্ত্র আর ভোট প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

সুতরাং ভোট ছাড়া গনতন্ত্র কি ভাবে তৈরী করা যায় সেটাই ভেবে দেখা দরকার। কারণ ডাক্তার চিকিৎসা করতে এসে রোগীকে মেরে ফেলতে চাইছে। তাই টাকা দিয়ে ডাক্তার আনার দরকার কি?

ড. এ, কে, এম, রিপন আনসারী
সভাপতি
অনলাইন প্রেসক্লাব বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *