ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর যে মাওবাদী হামলা হতে পারে, সে আশঙ্কায় সতর্কবার্তা জারি হয়েছিল আগেই। এবার বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পাঠানো বিশেষ বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলার আশঙ্কা ‘চরম পর্যায়ে’পৌঁছেছে।
তার সুরক্ষা বলয় আরও জোরদার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় থাকা স্পেশাল প্রটেকশন গ্রুপ (এসপিজি) এর ছাড়পত্র না মিললে, মোদির ধারে কাছে সরকারি কর্মকর্তারা তো বটেই, যেতে পারবেন না মন্ত্রীরাও।
কিন্তু হামলার ছক কাদের তা নিয়ে সরাসরি কিছু জানায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, অজানা হুমকি’র কথা। যদিও এই মাসের প্রথম দিকেই নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে মুম্বাই, নাগপুর ও দিল্লিতে ধরপাকড় চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন দলিত নেতা সুধীর ধাওয়ালে, আইনজীবী সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, মহেশ রাউত, সোমা সেন ও রোনা উইলসন।
পুনে পুলিশ দাবি করেছিল, মোদির উপর হামলার ছকের কথা রোনা উইলসনের বাড়ি থেকে পাওয়া গোপন এক চিঠি থেকে জানা গিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছিল, দেশের ১৫টি রাজ্যে বিজেপি ভালই সরকার চালাচ্ছে। যদি ওরা এভাবে এগোয়, তাহলে আমাদের পক্ষে বিপদের কারণ হয়ে উঠবে।
তাই মোদি যুগের অবসান ঘটানো দরকার।
সেই চিঠির উপর ভিত্তি করে পুনে পুলিশ দাবি করেছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে যেভাবে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই মাওবাদীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপরেও হামলার চেষ্টা করছে। বিরোধীরা পুনে পুলিশের এই দাবিকে ‘আষাঢ়ে গল্প’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু নিরাপত্তায় ফাঁক রাখতে রাজি নয় এসপিজি।
মোদির জন্য তৈরি করা সুরক্ষা নীতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আগে সরকারি কর্মকর্তাদের তল্লাশি চালানো হবে। তল্লাশির হাত থেকে রেহাই মিলবে না মন্ত্রীদেরও। এগিয়ে আসছে লোকসভা নির্বাচন। গত নির্বাচনে একাধিক রোড শো করে প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন মোদি। কিন্তু ‘অজানা হুমকি’ থাকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইছে, রোড শো থেকে মোদিকে দূরে রাখতে। নইলে বিপদ হতে পারে।
কয়েক দিনের মধ্যে ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব সফরে যেতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। তার আগে মোদীর নিরাপত্তা ফাঁকফোকর দূর করতে গিয়ে ঘুম ছুটেছে এসপিজি-র।