বিশ্বকাপ এলেই প্রিয় দল ও খেলোয়াড়দের নিয়ে বাড়ে সমর্থকদের উন্মাদনা। নানা উপায়ে নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করেন ভক্তরা।
কেউ জার্সি পড়ে, কেউ পতাকা টানিয়ে। পাশাপাশি পছন্দের দলকে সমর্থন করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ ভিড় করেন স্টেডিয়ামে। আবার মাঠে বসে খেলা দেখার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খরচ যোগাড় করতে না পেরে টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখতে হচ্ছে বেশিরভাগ সমর্থককে। কিন্তু এমন ভক্তও আছেন যিনি প্রায় সাইকেলে চড়েই পৌঁছে গেছেন রাশিয়া।
ভারতের কেরিলার চেরথালার বাসিন্দা ক্লিফিন ফ্রান্সিস সে ধরনের কাজই করেছেন। কোচির এক স্কুলে গণিতের শিক্ষক ২৮ বছর বয়সী ক্লিফিন। জানা গেছে তিনি আর্জেন্টাইন জাদুকর লিওনেল মেসির ভক্ত। আর সাইকেল নিয়ে ঘোরা তার নেশা।
এবারে ফিফা বিশ্বকাপে মেসির খেলা দেখা কোনোভাবেই মিস করতে চাননি ক্লিফিন।
অথচ যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সেটাও জোগাড় করতে পারেননি। শিক্ষকতা করে এতদিনে যা টাকা জমিয়েছিলেন তাতে দুবাই পর্যন্ত যাতায়াতের বিমান ভাড়া জুটে যাবে তার।
কিন্তু তারপর? ক্লিফিন ঠিক করে ফেলেন বাকি রাস্তাটা সাইকেলে চেপেই রওনা দেবেন। স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার স্কুল। স্কুল থেকে এতদিনের ছুটির অনুমোদন মিলছিল না। স্বপ্ন পূরণ করতে তাই চাকরি থেকেও ইস্তফা দিয়ে দেন ক্লিফিন।
ক্লিফিন জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কেরালা থেকে রওনা দেন। প্রথমে বিমানে দুবাই পৌঁছান। দুবাইয়ে একটি সাইকেল কিনে নেন এবং সাইকেলে চেপেই মস্কো পর্যন্ত ৪০০০ কিলোমিটার পাড়ি দেন। সৌদি আরব, ইরান এবং আজারবাইজান পেরিয়ে ৫ জুন ক্লিফিন পৌঁছে গেছেন রাশিয়য়ে। সেখান থেকে আরো ছয়শ কিলোমিটার পেরিয়ে পৌঁছে যান মস্কোয়।
ক্লিফিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই ফুটবলকে ভালোবাসি। আর্জেন্টিনা আমার প্রিয় দল। আর গ্যালারিতে বসে বিশ্বকাপ দেখা আমার স্বপ্ন। কিন্তু সবটাই খুব ব্যয়সাপেক্ষ। যা সময় পেয়েছি তাতে ফ্রান্স আর ডেনমার্কের খেলাটাও দেখব। তারপর রাশিয়ায় কিছুদিন কাটিয়ে বাড়ি ফিরব। সাইকেলে মেসির অটোগ্রাফ নেওয়াটাই এখন মূল লক্ষ্য তার।