২০১৭ সালের শুরু থেকেই টিভি পত্রিকায় ঘ্যান ঘ্যান করে আসছি আরেকটা বিয়ে করবো। এ নিয়ে আমার একমাত্র বউয়ের কোন অবজেকশন না থাকায় জাতিরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা নয়। মাঝে মাঝে ফ্যান পেজে এই নিয়ে মন্তব্যের উত্তরও দিয়েছি। বেশির ভাগ অডিয়েন্স পোল বিয়ের বিপক্ষে আর কিছু রহম হৃদয় ফ্যান বলেছেন- ভাবিকে একটু বিশ্রাম দেয়া দরকার। আমিও ভেবে দেখলাম কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রেম বিয়ে সংসার নিয়ে মোট ত্রিশ বছর কেটে গেল। একজন ক্রিকেটার এবং দলীয় অধিনায়ক হিসেবে আমার বেগমের ক্ষেত্রে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ অপশনটা অ্যাপ্লাই করা যেতে পারে, তবে ডিভোর্স শব্দটা এক্ষেত্রে আসবে না। তাছাড়া ছেলেরাও যুবক হয়ে গেছে, এখন ওরাই আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। বাই চান্স যদি ওরা দ্রুত বিয়ে করে ফেলে তাহলে আমি একটা শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে যেতে পারি, সুতরাং হাতে সময় কম। আর পৃথিবীতে আমিই একমাত্র পুরুষ না যিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবছেন। আমার অবিবাহিত এবং সদ্য বাবা হওয়া বন্ধুদের কাছ থেকে বেসিক উৎসাহ পাচ্ছি। এদিকে মারজুকের গান গাইলাম বকবক টগবগ, প্রেম বিরহ বিবাহ ডিভোর্স নিয়ে মিডিয়া আর জাতি উত্তেজিত। মিডিয়াতে এ বছর সর্বসাকুল্যে হয়তো ১০টি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে ফ্যানদের কৌতূহলের শেষ নেই। কোন কোন ফ্যানতো আর্টিস্টের ক্যারিয়ার শেষ বলে মতামত দিচ্ছে দেদারছে। ক্যারিয়ার আসলে পাকা জাম ফল না, আড়াই দিনে ঝরে পঁচে যাবে। পত্রিকা বেচার একটা ছোট কৌশল হচ্ছে- সেলিব্রেটিদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে নাড়াচড়া করা। অথচ প্রচুর সাংবাদিকের কিচ্ছা আমার কাছে আছে, যেগুলোর কারণে আমিই ‘সাপ্তাহিক সাংবাদিক সংবাদ’ নামে একটি পত্রিকা খুলতে চেয়েছিলাম। এদিকে খবর নিয়ে দেখেছি সেলিব্রেটিদের নিয়ে যারা বকবক করে, তাদের মধ্যে বিবাহোত্তর ডিভোর্সের হার হাজার হাজার গুণ বেশি, হাতে প্রমাণের অভাব নেই। তাদের নিয়ে আলোচনা হবে না, কারণ তারা শোবিজের লোক না, উপভোগকারী মাত্র। যাইহোক, গত আঠারো মাস ঘোষণা দিয়ে একটা বিয়ের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি, কাজ হচ্ছে না। আমার বেগমের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি, ছেলেরাও ১৮+ হয়ে গেছে, আমি দায়িত্ব মুক্ত, এবার জোর চেষ্টা চালাবো। টেলিফোনে এসএমএস করে এক আপু লোভনীয় অফার দিয়েছে, আমার ভয় ধরে গেছে। পূর্ব দক্ষিণে সারাজীবন কাটালাম, পশ্চিমে কেবলা, এবার উত্তরে যাবো, আশা করি রংপুরেই বিয়েটা করতে পারবো। যার জীবন, সেই তার জীবনের প্রয়োজনীয়তা বুঝবে, গ্যালারি ভর্তি দর্শকের তা বোধগম্য হওয়া সম্ভব নয়। সবার দোয়া এবং বদদোয়া নিয়েই এগুতে চাই, মূল শ্লোগান হোক– বদমাইশির চেয়ে বিয়ে উত্তম!!

Slider বিচিত্র

215626_bangladesh_pratidin_sushma

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়া বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বণ্টন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সোমবার দিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদ চার বছর পূতি উপলক্ষে সোমবার বিকালে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন সুষমা। এসময় তিনি জানান, ‘ভারত সরকার বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান চায়, কিন্তু এই চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষকে সঙ্গে না নিয়ে তিস্তা চুক্তি সম্ভব নয়। কেবলমাত্র ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তিস্তা ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারও একটি বড় স্টেক হোল্ডার। সে কারণেই আমরা (কেন্দ্রীয় সরকার) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথে আলোচনা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’।

এর আগে, রাজ্যের স্বার্থের প্রশ্ন তুলে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং’এর সফরসঙ্গী হওয়া থেকে বিরত থাকেন মমতা ব্যানার্জি। ফলে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিও বাস্তবে রূপ পায়নি। এরপর দুই দেশের পক্ষ থেকে একাধিক বার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাতে সফলতা আসেনি। শেষবার গত বছরের এপ্রিলে শেখ হাসিনার ভারত সফরে নরেন্দ্র মোদি তিস্তা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তিস্তার বিকল্প হিসাবে বাংলাদেশকে তোর্সাসহ অন্য কয়েকটি নদীর পানি দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

যদিও সেই প্রস্তাবকে দিল্লি বা ঢাকা কেউই গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি।
ওই প্রসঙ্গ তুলে সুষমা স্বরাজ জানান, ‘গত বছরে শেখ হাসিনা যখন ভারত সফরে আসেন তখন মমতা ব্যানার্জির একটি বিকল্প প্রস্তাব ছিল। তিস্তা ছেড়ে দিয়ে অন্য তিন নদীর পানি দেওয়ার কথা বলেন মমতা। সেক্ষেত্রে তিস্তা দিয়ে যতটা পরিমাণ পানি যায় অন্য তিন নদী দিয়েও যদি সমপরিমাণ পানি যেতে পারে সেক্ষেত্রে তিস্তাকে বাদ দিয়ে পানি দেওয়া যেতে পারে। ওই বিষয়টির ওপর একটি জরিপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আমরা ওই রিপোর্টটি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি’।

তিস্তা চুক্তি মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রে চার বছর ধরে রয়েছি এবং এখনও এক বছর বাকী রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থ বলতে পারেন না’।

সুষমা জানান, ‘দুই দিন আগে (২৬ মে) কেন্দ্রীয় সরকারের চার বছর পূর্ণ হয়েছে। আরও এক বছর শেষ হওয়ার আগেই আমাদের ব্যর্থ বলছেন? আপনারা অপেক্ষা করুন…আমরা একটি সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করছি’। কারণ এই চুক্তির সাথে একটি তৃতীয় পক্ষও (পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার) জড়িয়ে রয়েছে। তাই তাদের সাথে না নিয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাই, তবে তা বাস্তবায়িত কিভাবে করবো? পানি তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাবে, তাই আমাদের নীতি হল এই চুক্তির সাথে যে সকল পক্ষ জড়িত রয়েছে তাদের সাথে নিয়েই অগ্রসর হব’।

তিস্তা ইস্যুতে মমতা সরকারের গুরুত্ব অনুধাবন করেই পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে রবিবার (২৭ মে) কলকাতার তাজ হোটেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মমতা ব্যানার্জি। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মমতা জানান, ‘দুই দেশের বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে আমরা সবসময় আলোচনা করি। আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ব্যবসা, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিভাবে উন্নত করা যায়, দুই দেশের সবাই যেন ভাল থাকে-এগুলো নিয়েই বিশদ আলোচনা হয়েছে’। কিন্তু তিস্তা নিয়ে প্রশ্ন করা মাত্রই সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান মমতা ব্যানার্জি।

জানা গেছে, চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তাই তিস্তার পানি দেশে নিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে মমতার কাছেও কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের প্রায় ছয়টি জেলার কৃষিকাজ নির্ভর করে তিস্তার পানির ওপর। স্বাভাবিকভাবে ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতাও রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুন্ন হোক এমনটা চাইবেন না। এমন এক পরিস্থিতিতে বিকল্প প্রস্তাবের দিকে ঝুঁকছে দুই দেশ।

একাধিক সূত্রে আরও জানা যায়, তিস্তা নিয়ে স্থায়ী চুক্তি হচ্ছে না দেখে তিন বছরের জন্য যাতে অস্থায়ী তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি করা যায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারত সরকারকে সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে তিন বছর দেখার পর চুক্তিতে কোনো সমস্যা হলে তা রদবদল বা বাতিলের পথ খোলা থাকবে।
২৭ তারিখের ওই বৈঠকে মমতা ব্যানার্জিকে শেখ হাসিনা সেই প্রস্তাব দিয়ে থাকতে পারেন বলে সূত্র দাবি করেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মন বুঝতে এবং তিস্তা নিয়ে একটি কার্যকরী পরিকল্পনা বের করতেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠক শেষে মমতা তিস্তা নিয়ে সেদিন একটি কথাও বলেননি ঠিকই, তবে তিস্তা নিয়ে আলোচনার দরজা বন্ধও করে দেননি তিনি।

মমতার সাথে বৈঠকের আগে গত ২৬ মে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনের পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় আধা ঘণ্টার বৈঠক হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। নিরাপত্তা, সীমান্ত সন্ত্রাস, রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। ওই বৈঠকেও তিস্তা ইস্যুটি গুরুত্ব পায় বলে সূত্রে জানা গেছে।

দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতেও কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেছেন, ‘দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তাতে ভারত খুশি’।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের নীরবতা নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা অস্বীকার করে সুষমা আরও বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন কোনো অভিযোগ করা হয়নি যে ভারত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষ নিয়েছে’।

সুষমা ছাড়াও সোমবারের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দেশটির দুই পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী এম.জে.আকবর ও ভি.কে.সিং এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *