গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহ নেই, আছে অস্বাভাবিক বৃষ্টি

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

06MNMANGRAIN

বাংলার ষড়্ঋতুর প্রথমটি গ্রীষ্ম। বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ দুই মাস গ্রীষ্মকাল। এ সময় মাঝে মাঝেই বিভিন্ন মাত্রার তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক। কিন্তু এ বছর এখনো তাপপ্রবাহ আসেনি। এটি যেমন অস্বাভাবিক, তেমনি অস্বাভাবিক এ সময়ে এই পরিমাণ বৃষ্টি এবং প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হওয়া। মাসজুড়ে কালবৈশাখী এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বজ্রপাতও স্বাভাবিক নয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মে মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র এবং দেশের অন্যত্র দু-একটি মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ আসার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো তেমন তাপপ্রবাহ আসেনি। গতকাল বৃহস্পতিবারও দেশের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস হচ্ছে, মাঝেমধ্যে ব্যতিক্রম ছাড়া আপাতত এই অবস্থাই চলবে। অর্থাৎ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিই হবে প্রধান প্রবণতা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এ বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের গতকাল পর্যন্ত দেশে গড় বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। গ্রীষ্ম ঋতুতে এ রকম অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, দীর্ঘ সময় ধরে কালবৈশাখী, অত্যধিক সংখ্যায় বজ্রপাতের প্রবণতা শুরু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে। অথচ এই অধিদপ্তরেরই গবেষণায় পাওয়া তথ্য হলো, ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছর গ্রীষ্ম ঋতুতে গড় বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু কম। তিন বছর ধরে সেই ধারায় পরিবর্তন হয়েছে।

মে মাস শেষ হয়ে এসেছে। জুনের প্রথমার্ধে সারা দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করার কথা। এই বায়ুই দেশে বর্ষাকাল নিয়ে আসে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস হচ্ছে, জুনে সারা দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে অন্তত একটি নিম্নচাপ।

তবে আবহাওয়ার যে গোলমেলে আচরণ, তাতে এই পূর্বাভাস কতটা ফলবে, সে বিষয়ে সন্দেহের কারণ আছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাতের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আবহাওয়ার এই গোলমেলে আচরণ। কাজেই বাংলায় যে ঋতু বর্ষাকাল, সেই আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবেই, তা বলা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *