কারও বাড়ি উৎসব কারও বাড়ি অনশন—————–রিপন আনসারী

Slider টপ নিউজ সম্পাদকীয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতি

কবি-নজরুল-702x336

আজ শুক্রবার কবি নজরুলের ১১৯তম জন্মজয়ন্তী। রাষ্ট্রীয় আয়োজন ছাড়াও দিনটিতে থাকছে নানা আয়োজন। আমাদের জাতীয় কবির শুভরজতজয়ন্তীতে জানাই লাখো কোটি সলাম।

১৯৪২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার সাড়ে চার মাস আগে প্রকাশিত একটি কবিতায় ধারণাটি অবাস্তব ও ইউটোপিয়ান হলেও কবি বলেছেন: ‘রবে না দারিদ্র্য রবে না অসাম্য’:

‘জয় হোক জয় হোক আল্লার জয় হোক/শান্তির জয় হোক সাম্যের জয় হোক/সত্যের জয় হোক জয় হোক জয় হোক।…নহিলে আল্লার আদেশ না মানিবে/পরকালে দোজখের অগ্নিতে জ্বলিবে/…রবে না দারিদ্র্য রবে না অসাম্য/সমান অন্ন পাবে নাগরিক গ্রাম্য/রবে না বাদশা রাজা জমিদার মহাজন/কারও বাড়ি উৎসব কারও বাড়ি অনশন।’

কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১৮৯৯ সালের ২৫ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম। ছোট বেলায় নজরুলের ডাকনাম ‘দুখু মিয়া’। ১৯০৮ সালে নয় বছর বয়সে তার বাবা মারা যায়। পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে দশ বছর বয়সে তাকে কাজ করতে হয়। এসময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সাথে হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ শুরু করেন। বাল্য বয়সেই একটি লেটো (কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমান নাট্যদল) দলে যোগ দেন। লেটো দলেই সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন। একইসাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ পুরাণসমূহ অধ্যয়ন করতে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তার নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন। তখন থেকেই তাকে সবাই কবি নজরুল বলে ডাকত।

১৯১৭ সালের শেষদিকে নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রথমে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় যান। প্রশিক্ষণ শেষে করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন। তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় আড়াই বছর। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক কর্পোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পর্যন্ত হয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে কলকাতায় এসে নজরুল ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে বসবাস শুরু করেন। তার সাথে থাকতেন এই সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা মুজফ্ফর আহমদ। এখান থেকেই তার সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু হয়। প্রথম দিকেই মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, উপাসনা প্রভৃতি পত্রিকায় তার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়। ১৯২০ সালের জুলাই মাসে নবযুগ নামক একটি সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হওয়া শুরু করে। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন শেরে-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক। এই পত্রিকার মাধ্যমেই নজরুল নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন।

১৯২২ সালের ১২ই আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করে। এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। ১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল।

১৯৪২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার সাড়ে চার মাস আগে প্রকাশিত একটি কবিতায় ধারণাটি অবাস্তব ও ইউটোপিয়ান হলেও কবি বলেছেন: ‘রবে না দারিদ্র্য রবে না অসাম্য’:

‘জয় হোক জয় হোক আল্লার জয় হোক/শান্তির জয় হোক সাম্যের জয় হোক/সত্যের জয় হোক জয় হোক জয় হোক।…নহিলে আল্লার আদেশ না মানিবে/পরকালে দোজখের অগ্নিতে জ্বলিবে/…রবে না দারিদ্র্য রবে না অসাম্য/সমান অন্ন পাবে নাগরিক গ্রাম্য/রবে না বাদশা রাজা জমিদার মহাজন/কারও বাড়ি উৎসব কারও বাড়ি অনশন।’

লক্ষণীয় এই যে, এ কবিতায় ধনীদের তিনি শ্রেণি-সংগ্রামের ভয় না দেখিয়ে দোজখের আগুনে পোড়ার ভয় দেখিয়েছেন।

‘দরিদ্র মোর পরমাত্মীয়’ কবিতায়ও সর্বহারাদের প্রতি কবি তাঁর গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু শ্রেণি-সংগ্রামের শেষে তারা জয়ী হবে—এ কথা বলেননি; বরং আল্লাহর আশ্বাসের কথা বলেছেন। ‘আল্লা আমার সহায়—আল্লা পুরাবেন মোর আশ;/গরিব ভাইরা ভয় নাই, আসে আল্লার আশ্বাস।/আসে আল্লার কাবার শির্নী, ক্ষুধার খোরাক আসে—রোজা শেষ হবে, দেখিব ঈদের চাঁদ পুন এ আকাশে। /দরিদ্র মোর নামাজ ও রোজা, আমার হজ-জাকাত; উহাদের বুকে কাবা-ঘর; মহা মিলনের আরফাত।’

‘ঈদের চাঁদ’ কবিতায়ও ঈদ উপলক্ষে নিজেদের ভাগ আদায় করে নেওয়ার জন্য চাষি, মজুর ও বিড়িওয়ালাদের আগমনের কথা বলেছেন, কিন্তু দোহাই দিয়েছেন আল্লাহ তাআলার: ‘সিঁড়িওয়ালাদের দুয়ারে এসেছে আজ/চাষা মজুর ও বিড়িওয়ালা; /মোদের হিস্‌সা আদায় করিতে ঈদে/দিল হুকুম আল্লাতালা/দ্বার খোলো সাততলা-বাড়ি-ওয়ালা, দেখো কারা দান চাহে, /মোদের প্রাপ্য নাহি দিলে যেতে নাহি দেব ঈদগাহে।’

শ্রেণি-সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে না দিয়ে তিনি আল্লাহর বিচারের কথা ‘শ্রমিক মজুর’ কবিতায়ও বলেছেন। তবে এ কবিতাটি তিনি আল্লাহর দোহাই দিয়ে শেষ করেননি; বরং সর্বহারাদের ‘শক্তি’র কথা বলেছেন। এ কবিতায় আমরা ধর্ম ও শ্রেণি-সংগ্রাম—উভয়ের কথা শুনতে পাই: ‘নহে আল্লার বিচার এ ভাই, মানুষের অবিচারে/আমাদের এই লাঞ্ছনা, আছি বঞ্চিত অধিকারে/…দেখেছি নিজের শক্তিকে, আর লাঞ্ছনা সহিব না!/যে হাত হাতুড়ি দিয়া গড়িয়াছি প্রাসাদ হর্ম্যরাজি,/সেই হাত দিয়া বিলাস-কুঞ্জ ধ্বংস করিব আজি।…গড়ার হাতুড়ি ধরেছি, এবার ভাঙার হাতুড়ি ধর।’ কবি এখানে শ্রেণি-সংগ্রাম সম্পর্কে তাঁর অভ্রান্ত সচেতনতা প্রকাশ করেছেন। তা ছাড়া, অন্যত্র তিনি এ কথাও ঘোষণা করেছেন যে, নির্যাতিতের ধর্মীয় পরিচয় নেই।

জানি না, তাহারা হিন্দু কি ক্রিশ্চান কি মুসলমান।

নির্যাতিতের জাতি নাই, জানি মোরা মজলুম ভাই।

তবে কবির দৃষ্টিভঙ্গি এ সময়ে ধর্মীয় চিন্তা দিয়ে এত প্রবলভাবে প্রভাবিত হয়েছিল যে, নির্যাতিতের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই, এ কথা বলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি আল্লাহর দোহাই দিয়েছেন:

‘এক আল্লার সৃষ্টিতে আর রহিবে না কোনো ভেদ,…

টলেছে খোদার আসন টলেছে, আল্লাহু-আকবর।…

সাত আসমান বিদারী আসিছে তাঁহার পূর্ণ ক্রোধ,

জালিমে মারিয়া করিবেন মজলুমের প্রাপ্য শোধ।’

তিনি অবশ্য নিজের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছেন ‘কেন আপনারে হানি হেলা’ কবিতায়। নিজের সৃষ্টি সর্বহারাদের জন্য নয় বলে তিনি এ কবিতায় অনুশোচনাও প্রকাশ করেছেন।

‘মোর বাণী ছিল রসলোকের আল্লার বাণী শুনিনু এই,

বিলাসের নেশা গেল টুটে জেগে দেখি আর সে আমি নেই।…

জমিদার মহাজনপাড়ায় মেয়ের বিয়েতে বাজে সানাই

ইহাদের ঘরে বার্লি নাই ওদের গোয়ালে দুধেল গাই।

আগুন লাগুক রসলোকে, কত দূরে সেথা কারা থাকে?…

মুক্তি চাহি না, চাহি না যশ, ভিক্ষার ঝুলি চাহি আমি,

এদের লাগিয়া মাগিব ভিখ, দ্বারে দ্বারে কেঁদে দিবাযামী।’

ভিক্ষা এবং দ্বারে দ্বারে কান্নার কথা বলে এ কবিতায় নজরুল আরও একবার প্রমাণ করেন, তিনি শ্রমিকশ্রেণির প্রতি আন্তরিকভাবে দরদি হলেও তিনি নিজে শ্রমিকশ্রেণির সদস্য নন, তিনি মধ্যবিত্ত। কিন্তু এ কবিতার অল্পকাল পরে চিয়াংকাইশেকের আগমন উপলক্ষে ১৯৪২ সালের প্রথম দিকে তিনি যে গানটি গ্রামোফোন কোম্পানির ফরমাশে রচনা করেন, তাতে তিনি শ্রমিকশ্রেণির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন: ‘হইব সর্বজয়ী আমরাই সর্বহারার দল/সুন্দর হবে, শান্তি লভিবে নিপীড়িত ধরাতল।’ মোট কথা, একুশ-বাইশ বছরজুড়ে বিস্তৃত তাঁর কবিজীবনের প্রথম ছয়-সাত বছর পর্যন্ত তিনি যতটা শোষিত মানুষের জন্য আন্তরিক সহানুভূতি দেখিয়েছেন, পরবর্তী প্রায় বছর পনেরো সেখান থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিলেন। তারপর আলো নেভার ঠিক আগে, শেষের আট-নয় মাস—তিনি আবার নিঃস্বদের জন্য তাঁর সমমর্মিতা প্রকাশ করেন। এবারে সেই সহানুভূতির সঙ্গে বাড়তি যা দেন, তা হলো সৃষ্টিকর্তার দোহাই।

১৯৪২ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বাকশক্তি হারান কবি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নজরুলকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরে কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি।

কবিতা: অগ্নিবীণা (কবিতা) ১৯২২, সঞ্চিতা (কবিতা সংকলন) ১৯২৫, ফনীমনসা (কবিতা) ১৯২৭, চক্রবাক (কবিতা) ১৯২৯, সাতভাই চম্পা (কবিতা) ১৯৩৩, নির্ঝর (কবিতা) ১৯৩৯, নতুন চাঁদ (কবিতা) ১৯৩৯, মরুভাস্কর (কবিতা) ১৯৫১, সঞ্চয়ন (কবিতা সংকলন) ১৯৫৫, নজরুল ইসলাম : ইসলামী কবিতা (কবিতা সংকলন) ১৯৮২ ।
কবিতা ও সংগীত: দোলন-চাঁপা (১৯২৩), বিষের বাঁশি (১৯২৪), ভাঙ্গার গান ( ১৯২৪), ছায়ানট (১৯২৫), চিত্তনামা (১৯২৫), সাম্যবাদী (১৯২৬), পুবের হাওয়া (১৯২৬), সর্বহারা (১৯২৬), সিন্ধু হিন্দোল (১৯২৭) , জিঞ্জীর (১৯২৮), প্রলয় শিখা (১৯৩০) , শেষ সওগাত (১৯৫৮) ।

সংগীত : বুলবুল (গান) ১৯২৮, সন্ধ্যা (গান) ১৯২৯, চোখের চাতক (গান) ১৯২৯, নজরুল গীতিকা (গান সংগ্রহ) ১৯৩০, নজরুল স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৩১, চন্দ্রবিন্দু (গান) ১৯৩১, সুরসাকী (গান) ১৯৩২, বনগীতি (গান) ১৯৩১, জুলফিকার (গান) ১৯৩১, গুল বাগিচা (গান) ১৯৩৩, গীতি শতদল (গান) ১৯৩৪, সুর মুকুর (স্বরলিপি) ১৯৩৪, গানের মালা (গান) ১৯৩৪, স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯, বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২, রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬।
ছোট গল্প: ব্যাথার দান (ছোট গল্প) ১৯২২, রিক্তের বেদন (ছোট গল্প) ১৯২৫, শিউলি মালা (গল্প) ১৯৩১।
উপন্যাস : বাঁধন হারা (১৯২৭), মৃত্যু ক্ষুধা (১৯৩০), কুহেলিকা (১৯৩১) ।

নাটক: ঝিলিমিলি (নাটক) ১৯৩০, আলেয়া (গীতিনাট্য) ১৯৩১, পুতুলের বিয়ে (কিশোর নাটক) ১৯৩৩, মধুমালা (গীতিনাট্য) ১৯৬০, ঝড় (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬০, পিলে পটকা পুতুলের বিয়ে (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬৪।

প্রবন্ধ: যুগবানী (১৯২৬), ঝিঙ্গে ফুল(১৯২৬), দুর্দিনের যাত্রী (১৯২৬), রুদ্র মঙ্গল (১৯২৭), ধুমকেতু (১৯৬১)।

ড. এ কে, এম রিপন আনসারী
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *