মেসির হ্যাটট্রিকে বার্সেলোনার দুর্দান্ত জয়

খেলা

image_89346_0লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে এস্পানিওলকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নিজেদের মাঠে পিছিয়ে থাকা বার্সেলোনাকে জিতিয়েছেন আর্জেন্টিনার এই তারকা ফুটবলার।
রোববার নগর প্রতিপক্ষ এস্পানিওলকে ৫-১ গোলে হারিয়ে লা লিগার শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের দুই পয়েন্টের ব্যবধানেই থাকল লুইস এনরিকের দল।
ত্রয়োদশ মিনিটে ক্যাম্প নউকে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় এস্পানিওল। সের্হিও বুসকেতসের ভুলে বল পেয়ে যান সের্হিও গার্সিয়া। এরপর বল নিয়ে খানিকটা এগিয়ে জেরার্দ পিকেকে ফাঁকি গিয়ে গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকেও পরাস্ত করেন তিনি।
২৮তম মিনিটে এর চেয়েও সহজ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন গার্সিয়া। তবে তার দুর্বল শটটি যায় সোজা ব্রাভোর কাছে।
এ থেকেই পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ডি-বক্সের একটু বাইরে ফ্রি-কিক পেয়েছিল বার্সেলোনা। তবে দুর্ভাগ্য মেসির, তার দারুণ শটটি বাধা পায় ক্রসবারে।
এ পর্যন্ত লা লিগায় মেসির ৭টি গোলের প্রচেষ্টা ঠেকালো পোস্ট। এই দিক থেকে সবচেয়ে দুর্ভাগা মেসিই। এর পর সবচেয়ে বেশি পোস্টে বাধা পায় রিয়াল মাদ্রিদের করিম বেনজেমার (৪টি) গোলের প্রচেষ্ঠা।
৩২তম মিনিটে পিকের হেড একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। চার মিনিট পর সুয়ারেসের দূরপাল্লার শটটিও বারের একটু বাইরে দিয়ে যায়।
৩৮তম মিনিটে মেসির দারুণ একটি ক্রস খুঁজে পেয়েছিল জরদি আলবাকে। তবে বার্সেলোনার এই লেফট-ব্যাক ঠিকমতো শট নিতে পারায় তা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কিকো কাসিয়া।
৪২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আবারও গোলের দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। এবার ফাঁকায় বল নিয়ে এগুতে থাকা ভিক্তর সানচেসকে ঠেকিয়ে স্বাগতিকদের রক্ষা করেন ব্রাভো।
এগিয়ে থাকা এস্পানিওলের গোলের প্রচেষ্টাগুলো ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল স্টেডিয়ামের বার্সেলোনা সমর্থকদের। বিরতির সময় ঘনিয়ে এলে অধৈর্য হতে শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু বাঁ প্রান্তে নেইমার সুযোগ তৈরি করলেও নিষ্প্রভ ছিলেন সুয়ারেস। ম্যাচে ফিরতে বার্সেলোনার দরকার ছিল তাই মেসি জাদুর। হতাশ করেননি চারবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। বিরতির ঠিক আগেই দলকে সমতায় ফেরান তিনি।
ডি-বক্সের বেশ বাইরে বল পেয়ে এক ঝটকায় জায়গা তৈরি করেন নেন মেসি। এরপর চোখের পলকে নেন বাঁকানো একটি শট; বাঁ গোলপোস্টে লেগে জালে ঢুকে যায় বল।
বিরতির পর দলকে এগিয়ে নিতেও দেরি করেননি মেসি। ৫০তম মিনিটের গোলটি আগেরটার মতোই দর্শনীয়।
নেইমার বল পাঠিয়েছিলেন বাঁয়ে থাকা সুয়ারেসকে। উরুগুয়ের এই ফরোয়ার্ড পাস দেন ডি-বক্সের বাইরে থাকা মেসিকে। নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে বলটা একটু সামনে চলে গিয়েছিল, প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার এগিয়ে আসায় আরেকটি টোকায় বলটা আরেকটু সামনে নিয়েই আচমকা ডান পায়ের নিচু শটে জালে পাঠিয়ে দেন মেসি।
৫৩ মিনিটে রাকিতিচের কর্নার থেকে পিকের হেডে বার্সেলোনা এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি এস্পানিওল। বরং বার্সেলোনাই একের পর এক আক্রমণ করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়।
৭৭তম মিনিটে গোল পান লুইস সুয়ারেসের বদলি হিসেনে নামা পেদ্রো। জরদি আলবার উচু পাসে বল দারুণ দক্ষতায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ প্রান্ত দিয়ে জালে পাঠান স্পেনের এই ফরোয়ার্ড।
৮১তম মিনিটে পেদ্রোর সঙ্গেই বল দেয়া নেয়া করে হ্যাটট্রিকটি পূর্ণ করেন মেসি। ঘিরে থাকা তিন ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ডানে পেদ্রোকে বল বাড়ান মেসি; তা ফেরত পেয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে ভুল করেননি আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
বার্সেলোনার হয়ে সব ধরণের প্রতিযোগিতা মিলে এটি মেসির ২৯তম হ্যাটট্রিক।
এই জয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে রিয়ালের পরেই দ্বিতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা। সমান ১৪ ম্যাচ শেষে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো মাদ্রিদ।
৩৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিকে শনিবার সেল্তা ভিগোকে ৩-০ গোলে হারানো রিয়াল মাদ্রিদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *