শনিবার ছুটির দিনেও ব্যস্ত সময় পার করলেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী

Slider বাংলার সুখবর

received_1784539828250604

রাজবাড়ী: শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে পবিত্র রমজানের ২য় রোজার দিনে কর্মব্যস্ত সময় অতিবাহিত করলেন রাজবাড়ীর সম্মানিত জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ শওকত আলী। গ্রামীণ রাস্তায় পদব্রজে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৮ টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সরেজমিনে তদারকি করেছেন সম্মানিত জেলা প্রশাসক।

গ্রামীণ জনপদে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের “গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা/কাবিখা) কর্মসূচি” এবং “অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি)” কর্মসূচির ৮ টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জনাব এস, এম, মনোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জনাব বিজয় কুমার প্রামানিক, রামকান্তপুর, চন্দনী ও খানগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রথমে সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) এর আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত ৪ নং ওয়ার্ডে কাজলের বাড়ী হতে খলিলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকায় ৪৬ হাজার ২০০ ঘনফুট মাটি দিয়ে ৩৩ জন শ্রমিক দ্বারা রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শুরু্ হয়েছে ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে এবং শেষ হবে ৯ জুন, ২০১৮ তারিখে। কাজের অগ্রগতি ৬০%।

এ প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি চলে যান একই ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ২য় পর্যায়ে গৃহীত বড়মুরারীপুর মহসিনের বাড়ী হতে বালিয়াকান্দি পাকা সড়ক পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের মাটির কাজ সরেজমিনে দেখতে। ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ রাস্তার জন্য বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণ ৪.০৯৭ মেট্রিক টন।. এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ১০০%।

রামকান্তপুর ইউনিয়নের দুটি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয় দুপুরে চন্দনী ইউনিয়নের ৪ টি প্রকল্প পরিদর্শন করেন। চন্দনী ইউনিয়নে গিয়ে তিনি প্রথমে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ২য় পর্যায়ে গৃহীত ঘোরপালান বারেকের বাড়ী হতে আফসারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ২৭০ মিটার। বরাদ্দকৃত গমের পরিমাণ ৫ হাজার মেট্রিক টন। এ প্রকল্পে ৩ টি লীডে ৮ শত ৮৭ ঘনমিটার মাটির কাজ করা হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ১০০%।

এর পর একই ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) এর আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত চন্দনী দত্তপাড়া কবরস্থান হতে কেয়ারের রাস্তা পর্যন্ত ও আজুগাড়া মসজিদের মাঠ ভরাট এবং কালভার্ট স্থাপন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ৩৫ জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্পে ৪৯ হাজার ঘনফুট মাটি দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৬০%।

উক্ত প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি একই ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ১ম পর্যায়ে গৃহীত চাঁদপুর হাইওয়ে হতে রায়পুর রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন।এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা। ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ রাস্তার কাজের অগ্রগতি ১০০%।

এর পর একই ইউনিয়নের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) এর আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত চাঁদপুর হাবু মাস্টারের বাড়ী হতে তাইজেলের বাড়ী পর্যন্ত এবং রতনের বাড়ী হতে জোকাই অভিমুখী রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ৩৫ জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি ৬০%।

চন্দনী ইউনিয়নের প্রকল্পসমূহ পরিদর্শন শেষে সম্মানিত জেলা প্রশাসক বিকেলে খানগঞ্জ ইউনিয়নের দুটি প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। খানগঞ্জ ইউনিয়নে তিনি প্রথমে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) এর আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২য় পর্যায়ে গৃহীত বাসুদেবপুর আমজাদ হোসেন বকুর চাতাল হতে বিমলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা। ২৮ জন শ্রমিক দ্বারা এ প্রকল্পের মাটির কাজ করানো হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি ৬০%। এর পর তিনি ঘূঘূশাইল মহিদ মেম্বরের বাড়ী হতে জাফরের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। ২৪ জন শ্রমিক এ প্রকল্পে মাটির কাজ করছেন। কাজের অগ্রগতি ৬০%।

এ সকল প্রকল্প পরিদর্শনকালে বাসুদেবপুর আমজাদ হোসেন বকুর চাতালের নিকট হড়াই নদীর পাশে একটি কালভার্ট স্থাপনের জন্য এলাকাবাসী সম্মানিত জেলা প্রশাসকের নিকট দাবী জানান। তিনি স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং সেখানে তিন ফুট ডায়া বিশিষ্ট তিন ভেন রিং কালভার্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাজবাড়ী সদরকে পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রকল্পসমূহ পরিদর্শনকালে প্রকল্পস্থানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয় কথা বলেন এবং তারা সঠিকভাবে মজুরী পাচ্ছে কি না তার খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এর সুফল সম্পর্কে এলাকাবাসীর সাথেও কথা বলেন তিনি।

রোজার মাসে সাপ্তাহিক ছুটির দিন স্বয়ং জেলা প্রশাসক মহোদয় গ্রামীণ জনপদে পায়ে হেঁটে মাটির কাজ পরিদর্শন করছেন দেখে এলাকাবাসী সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ধন্যবাদ জানান এবং এভাবে সরেজমিনে প্রকল্প পরিদর্শন ও তদারকির ফলে কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

এ সকল প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সম্মানিত জেলা প্রশাসক বিকেল চারটার দিকে জেলা সদরে প্রত্যাবর্তন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *