ব্যাংকগুলোর মরণ-ঘন্টা, দায় সরকারকেই নিতে হবে : মির্জা ফখরুল

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

317349_125

আওয়ামী সরকারের বর্তমান ক্ষমতার ৯ বছরে দেশের অধিকাংশ সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, ননব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিদারুণ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। সুশাসনের অভাব, জবাবদিহিতার অভাব, দুর্নীতি, লুটপাট, নীতিহীনতা আর বিশৃংখলা সব মিলিয়ে এক অস্থিতিকর ও নৈরাজ্যকর অবস্থায় রয়েছে বর্তমান ব্যাংকিং খাত। ঋণের নামে ও বিভিন্ন কারসাজি করে গ্রাহকের প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে আওয়ামী নেতাকর্মী, সমর্থক ও আওয়ামী মদদপুষ্ট গোষ্ঠী। মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর। দেশের একটি স্বনামধন্য গবেষণা সংস্থা তাই ২০১৭ সালে ব্যাংকিং সেক্টরের সার্বিক বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে ২০১৭ সালকে ‘ব্যাংক কেলেংকারির বছর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে দুই দফায় আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছর মেয়াদকে ‘ব্যাংক কেলেঙ্কারির দশক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলো তীব্র তারল্য সংকটে জর্জরিত। ধার-দেনা করে চলছে দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক। আমানতকারীরা লাইন ধরে আমানতের টাকা ফেরত নিতে চাচ্ছে। তারা চেক দিয়েও সময়মত টাকা পাচ্ছে না। তহবিলের অভাবে চেক বাউন্স হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদনপ্রাপ্ত ঋণও ফেরত নেও হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ব্যাংকাররা। আশানুরূপ কর্মসংস্থান হচ্ছে না। অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট হয়ে উঠছে। প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে ব্যাংকের মালিকানা জোর করে বদল হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বয়ং উদ্বিগ্ন হয়ে মন্তব্য করেছেন যে, ‘একটি বেসরকারি ব্যাংক খারাপ অবস্থায় পড়ে গেছে। এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি ব্যাংক থেকে আমানত সরিয়ে নিতে চাইছে। একটা আতংক তৈরি হয়েছে। এই আতংক আগে শেয়ার বাজারে ছিল, এখন ব্যাংকে চলে আসছে।’অথচ অর্থমন্ত্রী পরিস্থিতি গুরুতর নয় বলে দাবি করছেন। অর্থনীতির অবস্থা আর কত তলানিতে নামলে সরকারের নিকট ‘গুরুতর’ বিবেচিত হবে তা আমাদের বোধগম্য নয়।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক আতংকের শুরুটা বেসরকারি খাতের ফারমার্স ব্যাংক কেলেংকারির ঘটনা থেকে শুরু হলেও প্রকৃতপক্ষে বড় ধরনের ব্যাংক কেলেঙ্কারির শুরুটা হয় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সোনালী ব্যাংকের ‘হলমার্ক গ্রুপ কেলেঙ্কারি থেকে। হলমার্ক গ্রুপের লোপাটকৃত অর্থের পরিমাণ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই অর্থ আত্মসাতের সাথে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় নিযুক্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের নাম জড়িয়ে আছে। এছাড়াও বিসমিল্লাহ গ্রুপের ১২শ’ কোটি টাকার বহুল আলোচিত ঋণ জালিয়াতির কথা সবাই জানেন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘সাত বছরে আত্মসাৎ ৩০ হাজার কোটি টাকা’।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, ২০১০ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, হল-মার্ক, বেসিক ব্যাংক, বিসমিল্লাহ ও ডেসটিনির কেলেঙ্কারিসহ ছয়টি বড় অর্থ কেলেঙ্কারির বিস্তারিতসবার জানা আছে। তাছাড়া রয়েছে রূপালী ব্যাংক থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নেওয়া প্রায় হাজার কোটি টাকা, যার ৮০১ কোটি টাকা আদায়ের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া আছে অগ্রণী ব্যাংক থেকে বহুতল ভবন নির্মাণের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা। জনতাব্যাংক সকল নিয়মনীতি ভঙ্গ করে একক গ্রাহকের মালিকানাধীন এননটেক্স গ্রুপের ২২ প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ দিয়েছেন যার মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে। এটি একক ঋণের বৃহত্তম কেলেংকারি। ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদ ব্যাতিত কোন একক ব্যক্তির পক্ষে এত বিশাল ঋণ পাওয়া সম্ভব নয়। মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে। দেওয়া হয়েছে মোট মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ।রাজনৈতিক বিবেচনায় শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ার পর ব্যাংকটি দেউলিয়াত্বের পর্যায়ে চলে যায়। ব্যাংকটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে সংকটে পড়ে। এনআরবি ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকেও সীমাহীন অনিয়ম হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় ফারমার্স ব্যাংক চালু হবার পর ব্যাংকটি আমানতকারীদের ও সরকারি খাত হতে জমাকৃত অর্থ অধিকাংশ আত্মসাৎ করেছে। ‘নতুন প্রজন্মের ফারমার্স ব্যাংক ঋণ বিতরণে অনিয়ম, জালিয়াতি ও লুটপাটে অতীতের যেকোনো ব্যাংক কেলেঙ্কারি-অনিয়মকে ছাড়িয়ে গেছে।’ বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত কমে হয়েছে ৪ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা।

অথচ ব্যাংকটির ঋণ ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।’ এই ব্যাংকের কাছে পাওনা যে কেবল ব্যক্তিগত আমানতকারীদের বা প্রতিষ্ঠানের তা নয়, এর মধ্যে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের ৪৯৯ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সুদসহ যা ৫১০ কোটিতে পৌঁছেছে’। তার মানে, এই অর্থের মালিক এদেশের সাধারণ জনগণ এবং ব্যাংকটি জনগণের এই টাকাও আত্মসাৎ করে বসে আছে।অথচ এই ব্যাংকটি বাঁচানোর জন্য সরকার সম্প্রতি জনগণের করের টাকায় প্রায় ১,১০০ কোটি টাকা মূলধন পুনঃভরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানা যায় যা হবে সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য।

তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৮০০ কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডলার চুরির ঘটনায় ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা’ রয়েছে এবং ‘ব্যাংক ডাকাতির হোতারা ব্যাংকের ভিতরেই আছে’ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। বাংলাদেশ সরকারের আশীর্বাদ না থাকলে ব্যাংক ডাকাতির হোতাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে থাকা সম্ভব নয়। চুরি হয়ে যাওয়া অর্থের সামান্য অংশ ফেরত এলেও সিংহভাগ অর্থই আর ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা নেই। চুরির ঘটনার পরপর আমরা ফিলিপাইন ও শ্রীলংকায় সরকারি কর্মতৎপরতা দেখলাম, অথচ বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার একেবারেই নির্লিপ্ত। এ টাকা উদ্ধারে দীর্ঘ দু’বছর বিলম্বে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হ’ল কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লুটের বিষয়ে ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি কেন আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হলো না তা এখন আর রহস্যাবৃত নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে জুন ২০১৭ শেষেসরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে মন্দ-ঋণ বেড়ে হয়েছে ৬১ হাজার ৬০২ কোটি টাকা এর সাথে অবলোপিত ৪৫ হাজার কোটি টাকা, বিভিন্ন অপকৌশলে (ভূয়া দলিল, ভূয়া কোম্পানি, ভূয়া এলসি ইত্যাদি) ৬৫ হাজার কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কোষাগার থেকে ৮শত কোটি টাকা; অর্থাৎ লুটতরাজ আর অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয়ে গেছে। অনেকের মতে, ৪৫ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে বলে যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এই অর্থের পরিমাণ দেড় থেকে দুই লাখ কোটি টাকার কম নয়।

তিনি বলেন, খেলাপি ঋণই বাংলাদেশের ব্যাংক সংকটের মূল কারণ। ঋণের নামে গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত লুটে নিচ্ছে খেলাপিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক ডেপুটি গভর্নরের মতে, ‘খেলাপির সাগরে ভাসছে ব্যাংকিং খাত’। ‘অবলোপন’-এর দোহাই দিয়ে ঋণের তালিকা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে খেলাপিদের নাম। খেলাপি ঋণসংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বা মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশ। অর্থাৎ বাড়ার হার ৬.০১ শতাংশে। এর সঙ্গে অবলোপনকৃত ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা (জুন, ২০১৭ পর্যন্ত)। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, অবলোপন করা ঋণের পরিমাণও ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপির প্রায় ১৩ শতাংশ। খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর ঋণ আমানত অনুপাত থাকার কথা ৮৫%। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লংঘন করে বেপরোয়া ব্যাংকিংয়ের ফলে ১০ ব্যাংকের আমানত অনুপাতের সীমা ৮৫ ভাগেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে। । এতে গোটা ব্যাংক খাতে হঠাৎ করেই বেড়েছে তারল্য চাহিদা। বাড়তে শুরু করেছে ঋণের সুদের হার। আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় অনেকটা ব্যাংকবিমুখ হয়ে পড়ছেন গ্রাহকেরা। কিছু ব্যাংকের বেপরোয়া ঋণদানের কারণে কলমানিতের সুদের হারও বেড়ে গেছে। সুদ হার কমায় দুই বছর ধরেই আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। এ সত্ত্বেও কয়েকটি ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মোট ৯টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১৯ হাজার ৪ শত ৬৬ কোটি টাকা। ব্যাংক লুটেরাদের কারও বিরুদ্ধে কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সরকার ইতোপূর্বে এই সরকারি ব্যাংকগুলোকে জনগণের করের টাকা হতে বেইল আউট প্রোগ্রামের নামে ১৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা দিয়েছে যা স¤পূর্ণ অনৈতিক।এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সরকার এ অর্থ প্রদানের জন্য লাগামহীনভাবে ঋণ নিচ্ছে। অথচ এদেশের সাধারণ জনগণকেই এ ঋণের বোঝা বইতে হবে। সরকার বিভিন্ন কর ও ভ্যাটের নামে জনগণের নিকট থেকে এ অর্থ আদায় করবে। এমনিতেই বর্তমানে প্রত্যেক নাগরিকের মাথাপিছু ঋণের বোঝা ৪৯ হাজার ৩৩৫ টাকা। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব গিয়ে পড়বে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা বদলের পর দেশে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক এখন তীব্র আর্থিক সংকটে। সরকারি হস্তক্ষেপে মালিকানা বদলের পর মাত্র ১৫ মাসেই ব্যাংকটি এই ভয়াবহ দুর্দশায়পড়েছে। মূলত, গ্রাহকদের আস্থায় চিড়, অব্যবস্থাপনা, একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের কাছে রাতারাতি পুরো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়াএবং কয়েকজন পরিচালকের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে ব্যাংকটি এমন দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে বলে জানা যায়।

তিনি বলেন, ২০১৫ সনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে এমন ১১ বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের ১৫ হাজার কোটি টাকা পুনর্গঠনের নামে ঋণ নিয়মিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ খেলাপির তালিকা থেকে বাদ যায় আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট কয়েকটি বড় গ্রুপ। যার মধ্যে একটি গ্রুপের কর্ণধার বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন। বড় খেলাপিরা সবাই ক্ষমতাবান, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট। অন্যদিকে যাদের প্রয়োজন, সেই ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণকারীরা উপেক্ষিত, কারণ তাদের ক্ষমতা, প্রভাব বা রাজনৈতিক আশীর্বাদ নাই। ¯পটতই বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে দ্বৈতনীতির আশ্রয় নিয়েছে, যা নজিরবিহীন ও সকল মানদন্ডে অনৈতিক।এদিকে পুনর্গঠন পাওয়া তারকা ঋণগ্রহিতাদের অর্ধেকই নতুন করে খেলাপি হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংকের ২৫% ঋণ অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মাত্র ২০/২২ জন ঋণগ্রহীতাকে প্রদান করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও এই বিষয়ে কম যায় না। ব্যাংকগুলোর বড় বড় ঋণ প্রদানে বেশি ঝোক। গুটি কয়েক পরিবারের হাতে ঋণের নামে ব্যাংকের বিপুল অর্থ কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে গ্রাম-গঞ্জের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ঋণ পাচ্ছে না। এ কারনে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং নেই বললেই চলে। অর্থাৎ ব্যাংক ঋণ-সুবিধা প্রাপ্তিতে বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দেশের ১০০টি খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেন, কিন্তু তাতে সর্বজনবিদিত তারকা খেলাপিদের নাম নেই। যাঁদের নাম থাকা উচিত ছিল, তাঁদের প্রায় সবাই পুনঃতফসিলীকরণের আড়ালে তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন।২০১৬ সালের জুন মাসে সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীই বলেছিলেন – ‘কিছু কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাগরচুরি হয়েছে।’

তিনি বলেন, যখন দেশের ব্যাংকিং ক্ষেত্রে এমন চরম অরাজকতা বিরাজ করছে, এবং দেশে যখন নতুন ব্যাংক স্থাপনের আর কোন সুযোগ নেই বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, তখন সরকার এ বছর আরো তিনটি নতুন ব্যাংক স্থাপনের পাঁয়তারা করছে। বর্তমানে সদ্য নতুন ব্যাংকগুলোর নাজুক অবস্থা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট মহলের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকার-দলীয় লোকদের অনুকূলে নতুন ব্যাংক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলীয় ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের মালিকানা সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিশেষ গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয় যা ব্যাংকিং জগতে চিরস্থায়ী অশুভ প্রভাব ফেলবে এবং অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। বর্তমানে অবশিষ্ট বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যেও বেদখল হয়ে যাওয়ার মারাত্মক আতংক বিরাজ করছে বলে জানা যায়।

তিনি বলেন, অভিযোগ রয়েছে যে খেলাপি ছাড়াও অনেক ব্যাংক পরিচালক পার¯পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে নিজের ব্যাংক এবং অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার মাধ্যমে এক ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। লক্ষ্য করা যায়, মোট দেশজ উৎপাদনের তুলনায় ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ স্থবির রয়েছে, কিন্তু ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অথচ সেভাবে বিনিয়োগ নেই। তাহলে এই বিপুল পরিমান অর্থ যাচ্ছে কোথায়?ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং পরিবারতন্ত্র কায়েমের ফলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। ফলে বেড়ে গেছে মুদ্রা পাচার এবং ঋণখেলাপির মাত্রা।ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্থপাচারবিরোধী সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পুঁজি বা অর্থ পাচার হচ্ছে এবং ক্রমাগত এর পরিমাণ বাড়ছে। তার মানে, অভ্যন্তরীণ খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না, কিন্তু বিদেশে চলে যাচ্ছে। জিএফআই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৬ লক্ষ ৬ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। তারমধ্যে কেবল ২০১৩ সালে দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা, আর ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।এটি মূলত মানিলন্ডারিং। মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ জনগণ কখনও ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, আগে যেখানে একটি ব্যাংকে একই সময়ে একটি পরিবারের ২ জন পরিচালক ২ মেয়াদে ৬ বছর পর্যন্ত থাকার নিয়ম ছিল বর্তমান সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তা বাড়িয়ে একই পরিবারের ৪ জনকেপরিচালক পদেটানা ৩ মেয়াদে ৯ বছর থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। আর সঙ্গে যোগ হয়েছে একই পরিবারের বহু ব্যাংকের মালিকানার সুযোগ। ঐ পরিবারগুলো আবার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণের ঋণ গ্রহিতা। ঝুঁকির এ ধরনের বড় নজির পৃথিবীতে নেই। সংশোধিত আইন কার্যকর করা হলে পরিবারতন্ত্র কায়েমের মাধ্যমে পরিচালকদের লুটপাটের পরিমাণ নিঃসন্দেহে আরও বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত যখন খেলাপি ঋণের ভারে নুয়ে পড়েছে এবং অনিয়ম ও বিচারহীনতায় নিমজ্জিত, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত ছিল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কঠোরভাবে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় স¤পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তার উপর অতি সম্প্রতি ব্যাংক মালিকদের চাপের মুখে আরও ছাড় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী ব্যাংকগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার (ঈজজ)এক শতাংশ (১%) কমিয়ে দিয়েছে, এতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর হাতে যাবে এখন প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। মুদ্রানীতির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে সিআরআর (ঈজজ)। বিশ্বের সব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপক আলাপ-আলোচনা ও গভীর বিশ্লেষণের পর এই হার নির্ধারণ করে থাকে। অথচ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এই কাজ করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে হোটেলে ডেকে নিয়ে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে। ব্যাংক মালিকদের চাপে ব্যাংক খাতের এহেন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা খর্ব করা হল। অর্থমন্ত্রী নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘সিআরআর বিষয়ক সিদ্ধান্ত সালমান এফ রহমানের আইডিয়া’। দুর্নীতির কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে যে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে, সরকার সরকারি সংস্থাগুলোর অর্থ দিয়ে তা পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগে সরকারি সংস্থাগুলো তাদের অর্থের ২৫% পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে পারতো। সরকার এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ৫০% সরকারি ব্যাংকে রাখলেও বাকি ৫০% রাখতে হবে বেসরকারি ব্যাংকে। ফারমার্স ব্যাংকের কারণে সরকারি সংস্থাগুলো যখন বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখতে আস্থা হারিয়েছে, সরকার তখন সরকারি সংস্থাগুলোকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে তাদের তহবিলের ৫০% টাকা জমা করতে বাধ্য করছে।

তাছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক সোনালি ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ আমানতের সীমা সমন্বয়ের সময় ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে অনৈতিকভাবে ব্যাংকগুলোকে তাদের নীট মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোর সুযোগ করে দিয়েছে। তদুপরি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রদত্ত সুদ হার ৬ .৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রীর নিকট থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নেবার পরেই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গণভবনে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তারা ১৬০ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেন। এর আগেও আমরা দেখেছি যে কিছুদিন পর পর ব্যাংক মালিকদের সংগঠনের ব্যানারে ব্যাংক মালিকরা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকার চেক দান করেছেন। ব্যাংকগুলো যেখানে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছেনা সেখানে কিভাবে তারা ঈঝজএর নামে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোটি কোটি টাকার অর্থ প্রদান করেন তা নিয়ে আমানতকারীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে ঋণ কেলেঙ্কারিসহ ব্যাংক লোপাটের সংবাদ প্রকাশ বন্ধ করতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন অ্যাক্টের আওতায় একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রস্তাব করে, যার মাধ্যমে ব্যাংকের বিরুদ্ধে ‘নেতিবাচক প্রচারণা’ বন্ধ করা হবে। সরকার বিএবি’র প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। অথচ ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তথ্য গণমাধ্যমের কল্যাণেই মানুষ জানতে পারছে। এই প্রস্তাবনা মূলত সংবাদমাধ্যমের টুটি চেপে ধরার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না। এটি হবে দুর্নীতিবাজদের সরাসরি প্রশ্রয় ও সুরক্ষা দেওয়া। এর মাধ্যমে ব্যাংক সেক্টরের দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা হবে। এটি কোনও ভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান এই দুর্নীতি ও বিপর্যয়ের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ী। আর্থিক খাতে সুশাসন না থাকার ফলে ব্যাংক লুটেরারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় আওয়ামী আশির্বাদপুষ্ট মহল আরও উৎসাহিত হয়ে নানা কৌশলে ব্যাংকের অর্থ লুন্ঠন করেই যাচ্ছে। বর্তমানে সব ব্যাংকিং খাতে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা অচিরেই অর্থনীতিকে রক্তশূন্য করে ফেলবে। রাষ্ট্র ও সমাজ মুখোমুখি হবে গভীর সংকটে। বর্তমান অবৈধ সরকারকে অবশ্যই এই দায়ভার নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যেভাবে সন্ত্রাস হচ্ছে, বাংলাদেশে আর্থিক খাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেভাবে হচ্ছে দুর্নীতি। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যখন দুর্নীতি হয়, তখন তা ছোট পরিমাণে হয় না। এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়েছে, পাহাড় পরিমাণ দুর্নীতি করেও তাঁরা সরকারি আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে নিশ্চিন্তে পার পেয়ে যাচ্ছে। এটার প্রভাব পড়বে দেশের সার্বিক অর্থনীতি ও আগামী প্রজন্মের ওপর। Corruption in the financial sector is fully state-sponsored. So the wrong-doers can walk free, even getting away with murder.

তিনি বলেন, এই যে হাজার হাজার কোটি টাকা ‘নাই’ হয়ে গেল, তাতে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই। কারণ বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের জনগণের নিকট কোনও দায়ববদ্ধতা নেই। তারা মনে করে, পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে তাদের জনগণের ভোটের দরকার নেই। তাই দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ব্যাংকিং সেক্টরকে লোপাট করে আরও টাকার পাহাড় গড়তে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অর্থনীতির বারোটা বাজলে তাদের কিছুই আসে যায় না। দুর্নীতিগ্রস্ত ফ্যাসিস্ট সরকারের এহেন গণবিরোধী অর্থনীতি বিধ্বংসী কর্মকান্ড জনগণ কখনও ক্ষমা করবে না। একদিন জনতার আদালতে এদের বিচার হবে ইন-শা-আল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *