বুলেট ভর্তি দুই ‘তাওরাশ’ নিয়েই ঘুরছিল হাসান

Slider বিচিত্র

156

 

 

 

 

 

রাজধানীর মধ্যপীরেরবাগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জালালউদ্দিনকে খুনের পর থেকে বুলেট ভর্তি দুটি তাওরাশ পিস্তল সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল ঘাতক হাসান মাহমুদের। পুলিশ বলছে, টানা তিন দিন এই দুটি অস্ত্র নিয়েই ঘুরছিল হাসান। পরিদর্শক জালালকে গুলি করার পরপরই সে চলে যায় ৫ মিনিট দূরত্বের মায়ের বাসায়। তবে কিছুসময় পরই সেখানে পুলিশ হানা দেওয়ায় হাসান বের হয়ে যায়। মিরপুর এলাকাতেই রাত যাপন করে পরদিন চলে যায় গাজীপুরে। সেখানে দুই দিন কাটানোর পর আবার ঢাকায় ফিরে আসলে বৃহস্পতিবার রাত আরাইটার দিকে আগারগাঁও শাপলা হাউজিং এলাকার ভাঙা ব্রিজ সংলগ্ন একটি স্থানে পুলিশের জালে বন্দী হয়ে বন্দুকযুদ্ধেই মৃত্যু হয় হাসানের।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আমাদের ধারণা হাসান পরিদর্শক মো. জালালউদ্দিন হত্যায় সম্পৃক্ত ছিল। তার কাছ থেকে গত ১১ জানুয়ারি দুই সার্জেন্টের খোয়া যাওয়া দুটি অস্ত্র ৫ রাউন্ড গুলিসহ আরও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। হাসানের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় তিনটি চুরির মামলা রয়েছে। হাসানের ৩/৪ জন ঘনিষ্ঠ সহযোগী রয়েছে। তাদেরও খোঁজা হচ্ছে। গত ১৯ মার্চ সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ডিবির পশ্চিম বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার শাহাদাত হোসেন সোমার নেতৃত্বে দুই সার্জেন্টের অস্ত্র চুরির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মিরপুর মডেল থানাধীন মধ্যপীরের বাগের আলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছেই ১০৫/এ/১ নম্বর আড়াইতলা বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানেই পরিদর্শক জালাল দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ ঘটনার পরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসান তার মা রহিমা বেগমের সঙ্গে কথা বলে। এরপরই সে তার মায়ের বাসায় যায়। তবে কিছু সময় পর পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দিলে সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরদিন গাজীপুরে তার ভাই ফরিদের কাছে যায়। সেখানে দুই দিন কাটিয়ে ফের ঢাকায় আসে। তবে গাজীপুর থাকাবস্থায় সে তার এক সহযোগীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে।

ডিবির কর্মকর্তারা জানান, গত ১১ জানুয়ারি মিরপুরের মধ্য পীরেরবাগে ঝিলপাড়ের ২৯৯/৯/১/এ বাড়ির চতুর্থ তলার বাসার গ্রিল কেটে দুই সার্জেন্ট মামুনুর রশীদ ও সোহেল রানার সরকারি দুটি পিস্তল ও গুলি চুরি হয়। হাসান ও কামাল এই অস্ত্র চুরি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে পিস্তল ও গুলি চুরি করে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে হাসান ও কামাল পুলিশের অস্ত্র দেখিয়ে মিরপুর এলাকায় ছিনতাইও করেছে। হাসানের বাবা মৃত আবদুল মান্নান। মা রহিমা বেগম। গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর থানার বাপতায়।

ডিবির কর্মকর্তারা আরও বলেন, হাসান ও কামাল ইয়াবাসক্ত। ঘটনার দিন বাড়ির দোতলার ছাদে তারা ইয়াবা সেবন করছিল। এ সময় পরিদর্শক জালাল কার্নিশ বেয়ে ওঠার সময় হাসান বিষয়টি দেখে ফেলে। তত্ক্ষণাৎ ইট দিয়ে তারা জালালের মাথায় আঘাত করে। জালাল কার্নিশ ধরে ঝুলে পড়ে বাঁচার জন্য চিৎকার করলে, হাসান পুলিশের চুরি করা অস্ত্র দিয়ে পরপর দুই রাউন্ড গুলি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *