ঈদের আগে-পরে ৫ সিটির নির্বাচন!

Slider রাজনীতি

b8c036f2cee8bf01665304e8cd8e1e8e-59ded034a7c30

 

 

 

 

আগামী ঈদুল ফিতরের আগে গাজীপুর ও সিলেট সিটিতে এবং ঈদের পর খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল সিটিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাঁচ সিটি করপোরেশনের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে ৪ সেপ্টেম্বর, সিলেটের ৮ সেপ্টেম্বর, খুলনার ২৫ সেপ্টেম্বর, রাজশাহীর ৫ অক্টোবর ও বরিশালের ২৩ অক্টোবর। ফলে সরকারের মতামত নিয়ে দুই ভাগে এসব সিটি করপোরেশনে নির্বাচন আয়োজন করতে চায় ইসি। এসব সিটি করপোরেশনের সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ, নির্বাচন, আদালতের আদেশ প্রতিপালন ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থাসহ মতামত জানানোর জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দিয়েছে ইসি। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর এ চিঠি পাঠান ইসির যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান। নির্বাচন কমিশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনের জন্য চিঠি পাঠানোর বাইরেও সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বিষয়সহ বিভিন্ন জটিলতা নিরসন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানাতে হবে। কমিশন এবার সব জটিলতা শেষ করেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন শাখা সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর নিয়ে এখনো সীমানা জটিলতা আছে। সেখানকার ছয়টি মৌজা ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নভুক্ত। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম। হাইকোর্ট এটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলেও এ বিষয়ে এখনো ফয়সালা হয়নি। তবে বাকি সিটিগুলোয় মামলাজনিত কোনো সমস্যা নেই। এর মধ্যে সীমানা জটিলতায় থমকে গেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তাই এই সামনে পাঁচ সিটিতে নির্বাচন আয়োজনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে চায় না ইসি।
ইসির আরেকটি সূত্র জানায়, এবার স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচন করার জন্য চিঠি দিলেই হবে না। তাদের স্পষ্ট জানাতে হবে, কোনো সিটি করপোরেশনের সীমানা বেড়েছে কি না, নতুন ওয়ার্ড হয়েছে কি না বা অন্য কোনো জটিলতা রয়েছে কি না। ঢাকার মতো এই পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় যাতে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়, তাই সব কিছু ঠিক করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে স্থানীয় সরকার বিভাগেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সব ধরনের জটিলতা এড়াতে এবার প্রস্তুতি নিয়েই তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। তা ছাড়া সাধারণত বর্ষা ও রমজানের সময় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে চায় না ইসি। এ ছাড়া কিছু পৌরসভা নির্বাচন, ইউনিয়ন নির্বাচন রয়েছে। সব মিলিয়ে কমিশন বসে আলোচনা করেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজে লাগানো হবে। তাই অন্তত ছয় মাস আগে নির্বাচন শেষ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে কমিশনের। এইচএসসি পরীক্ষা শেষে হচ্ছে ৪ মে এবং পবিত্র রমজান শুরু হবে ১৭ মে। এর মাঝখানে যেকোনো সময়ে গাজীপুর ও সিলেট নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে ইসি। সে অনুযায়ী আগামী মে থেকে জুলাইয়ের যেকোনো সময় দুই ভাগে সব সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর আগেও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয় মাস আগে ২০১৩ সালের জুন-জুলাইয়ে পাঁচ সিটিতে নির্বাচন হয়। পাঁচটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিএনপির প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এরপর হয় কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন।

উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। আইনানুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। ৮ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। সিলেট সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। আইনানুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর। ১৩ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। খুলনা সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। আইনানুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ৩০ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। রাজশাহী সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। আইনানুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৫ অক্টোবর। ৯ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

বরিশাল সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। আইনানুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৩ অক্টোবর। ২৭ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *