সোলায়মান সাব্বিরঃ
গাজীপুরের প্রিয় মুখ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমইসব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নৌকার টিকেটে আগামী সিটি নির্বাচন করতে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে জাহাঙ্গীর আলমকে এমনই আভাস দেন দলের উচ্চপদস্থ নেতারা। মাদার অফ হিউম্যানিটি খ্যাত জননেত্রী শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীরকে মাঠ গোছাতে বলেন এবং স্থানীয় ভোটারদের পাশে থাকতে বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরকে বলেন, আমি আজকে গণভবনে গিয়েছিলাম, মমতাময়ী নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আমাকে মাঠে কাজ করতে বলেছেন। মানুষের পাশে থাকতে বলেছেন। এর বেশি কিছু এখন আর বলতে চাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলমের একনিষ্ঠ কর্মী নুরুল ইসলাম তিতুমীর বলেন , গাজীপুর থেকে নৌকার টিকেট জাহাঙ্গীরই পাচ্ছেন, এমনই আভাস দেওয়া হয়েছে তাকে। আমাদের প্রানপ্রিয় নেত্রী জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পদটি নিজে দিয়েছিলেন। মহানগরে জাহাঙ্গীরের রয়েছে বিশাল জনপ্রিয়তা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শেষ পর্যন্ত নৌকার টিকিট জাহাঙ্গীরেই আসবে বলে দলের হাইকমান্ড আভাস দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাকে নেত্রী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন, নেত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে ওয়ার্ড, প্রস্তাবিত থানা এবং মহানগর কমিটিকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করে যাচ্ছি। দলের অন্যান্য অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও আমার ভালো যোগাযোগ আছে। বিগত দিনের যে কোন সময়ের তুলনায় দল এখন অনেক শক্তিশালী এবং চাঙ্গা।
জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান , জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মহানগরের যানজট একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা দূরিকরণে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। মহানগরে তিন শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ সহকারী নিয়োগ দিয়েছি যার সম্পুর্ন খরচ জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষা ফাউন্ডেশন বহন করে যার প্রতিষ্ঠাতা আমি নিজে । যারা নগরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে । এছাড়া শিক্ষাবৃত্তিসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহন করে যাচ্ছি। তবে এটুকু বলতে পারি নৌকার টিকেট পেলে বিজয় সময়ের ব্যাপার। বিজয়ী হয়েই নেত্রীর বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রক্ষা করবো ইনশাল্লাহ ।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীর আলম গত সিটি নির্বাচনে আনারস প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন।শুধুমাত্র শেখ হাসিনার নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। এবং হাজার হাজার জনতার ভীরে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে গেলে জনতার বাধার সম্মুখীন হন।মাথায় কাফনের কাপড় পরিধানরত জনতার বিক্ষোবের কারনে যানবাহন এবং ট্রেন চলাচলও বন্ধ ছিল।এরপর জাহাঙ্গীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে আজমতউল্ল্যাহ খানকে সমর্থন করেন।মনোনয়ন প্রত্যাহার করার পরেও আনারস প্রতীকে ভোট দিয়েছেন অনেকেই।তৃণমূলের সঙ্গে আজমত উল্লার সুসম্পর্ক না থাকায় বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের কাছে প্রায় ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন । সিটি নির্বাচনের বছরখানেক পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্তত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বটিও দেন এই জনপ্রিয় নেতাকে। এমনকি সেই সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে আগামী নির্বাচনের জন্য মাঠ গোছানোর জন্যেও নির্দেশেনা দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল।
মহানগরের একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, গত সিটি নির্বাচনে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন পেলে জাহাঙ্গীর বিজয়ী হতো, সেই নির্বাচনের পর নেত্রী বিষয়টি বুঝতে পেয়ে তাকে মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ পদটিও দিয়েছেন। আগামী মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখেই দলের সভানেত্রী জাহাঙ্গীরকে পদটি দিয়েছিলেন। দিনের আলোর মতোই পরিস্কার জাহাঙ্গীরই পাচ্ছেন নৌকার টিকেট। শুনেছি দলের হাইকমান্ড ইতিমধ্যে মাঠে নেমে ভোটারদেও কাছে যেতে বলেছেন জাহাঙ্গীরকে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব এ বি এম নাসির উদ্দিন নাসির বলেন,মমতাময়ী মা, দেশনেত্রী শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীরকে সবুজ সংকেত দেওয়াতে মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও তৃপ্ত।গত সিটি নির্বাচনের ইতিহাস আর মনে করতে চাই না।তবে নৌকার টিকিট জাহাঙ্গীরের হাতে আসলে বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।সেই লক্ষেই আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। সবশেষে বলতে চাই, জাহাঙ্গীর আলম টিকিট পেলে দেশনেত্রীর সাথে দেখা হবেই হবে বিজয়ে।
সুশীল সমাজের নেতারা বলেন,জাহাঙ্গীর আলম যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং সর্বমহলে তার গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন্মুলক কাজের সাথেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী যদি জাহাঙ্গীর আলমকে নৌকার প্রতীক দেন তবে বিজয়ী হয়েই সফলভাবে নৌকার প্রতীক বহন করতে পারবেন।
গাজীপুর মহানগরের আওয়ামী লীগের নেতারাও মনে করছেন, নারায়ণগঞ্জের মতো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও বঙ্গবন্ধুর কন্যার চমক জাহাঙ্গীর আলম। ভোটের মাঠের ষ্ট্রাইকার হিসেবে জনপ্রিয় এবং তরুণ নেতা জাহাঙ্গীরকেই বেছে নিবেন আওয়ামীলীগ সভাপতি ।