পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষমতা খালেদা জিয়ার নেই : প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়
photo-1499525022
grambanglanews2.com

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্য করে বেগম জিয়া প্রমাণ করেছেন এই সেতু নির্মাণের কোনো ক্ষমতা তার নেই।

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সেতু বানাবার ওই ক্ষমতা তার নাই। এটা ওনার কথার মধ্যে দিয়েই উনি বুঝিয়ে দিয়েছেন। নইলে যার মাথায় এতটুকু জ্ঞান-বুদ্ধি আছে, তিনি নিশ্চয়ই সজ্ঞানে এ কথা বলবেন না।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান।

সরকার প্রধান বলেন, সরকারে এসেছি নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, জনগণের ভাগ্য গড়তে। আজকে যখন আমরা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করি তখন আপনারা শুনেছেন যে খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিচ্ছে- ‘ওই পদ্মা সেতু জোড়াতালি দিয়ে করা হয়েছে, কেউ পদ্মা সেতুতে উঠবেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু যখন আমরা নির্মাণ করছি সেটাও নাকি জোড়াতালি দিয়ে।

তিনি বিএনপি নেত্রীর বিদ্রুপের উত্তরে বলেন, হ্যাঁ একদিকে ঠিক, সেতু তৈরির জন্য প্রথমে এক একটা পার্ট তৈরি করে এবং সেটা পরে বসায়। যার এইটুকু জ্ঞান নেই একটা জিনিস তৈরি করতে হলে কিভাবে কোন পদ্ধতিতে করা হয়, যার মাখায় ওইটুকু ঘিলু নেই, তিনি কি করে এটি বুঝবেন। তার মাথায় শুধু ঘিলু আছে চুরি করার, টাকা বানানোর আর এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার, মানুষ পোড়ানোর, মানুষ হত্যার।

একদিন আগে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বক্তৃতায় বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘ওই পদ্মা সেতু জোড়াতালি দিয়ে করা হয়েছে, কেউ পদ্মা সেতুতে উঠবেন না।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের বহি:বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে ততই প্রগতির পথে যেতে হবে। প্রগতির পথে না গেলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে আমরা দেশকে সেভাবে উন্নত করতে পারব না।

তিনি বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, যারা দেশের ক্ষতি করতে পারে, কোনো কল্যাণ করতে পারে না, তারা দেশ ও জাতিকে কি বা দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে খালেদা জিয়ার দুই ছেলে এবং বেগম জিয়ার নিজের ঘুষ, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এবং বিদেশ থেকে পাচার করা টাকা উদ্ধারের বিষয়ে নানা তথ্য দেন। এ সময় রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের দায়ে তাদের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যখন বিশ্ব ব্যাংক আমাদের ওপর দোষারোপ করল- আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম। কারণ চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মত সৎ সাহস ছিল বলেই দিতে পেরেছি। আর ওই একটি ঘটনায় অর্থাৎ চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যখন নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু তৈরির উদ্যোগ নিলাম তখন আন্তর্জাতিক বিশ্ব বুঝে নিয়েছে এই বাংলাদেশ বিজয়ী জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধর মধ্যে দিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। কারো কাছে মাথা নত করে আমরা চলি না। আমরা মাথা উঁচু করেই চলব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ এর পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এক রকম নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ বাজাতে যেয়ে আমার ছাত্রলীগের নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ভিপি চুন্নুকে জীবন দিতে হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যা করে ছাত্রদলের ক্যাডাররা। এ রকম আমাদের আরো বহু নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছে। ওই শহীদ মিনারে সোহরাবকে হত্যা করেছে। আমাদের নেতা (বর্তমান ত্রাণ মন্ত্রী) মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বুকে ছুরি মেরেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, তারা আসলে কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারেনি। তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন, তারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস রাখতো তাহলে কখনও ৭ মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করতো না। আর আজকে সেই ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে আড়াই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ব্রিটিশ লেখক জ্যাকব এফ ফিল্ডের ‘উই শ্যাল ফাইট অন দ্যা বিচেস-দ্যা স্পিচেস দ্যাট ইনস্পায়রড হিস্ট্রী’ শীর্ষক বইতেও জাতির পিতার ভাষণকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সেখানে আরো ৪১টি ভাষণ রয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যালেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, জুলিয়াস সিজার, অলিভার ক্রমওয়েল, জর্জ ওয়াশিনটন, নেপোলিয়ান বোনাপার্ড, জোসেফ গ্যারিবল্ডি, আব্রাহাম লিংকন, ভ্লাদিমির লেনিন, উইনস্টন চার্চিল, উড্রো উইলসন, ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট, চালর্স দ্যা গল, মাওসেতুং, হোচিমীন-তাদের ভাষণের সঙ্গে এক নম্বরে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে স্থান পাওয়ায় এই একটি মাত্র ভাষণ আজকে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। অথচ এই ভাষণকেই প্রজন্মের পর প্রজন্মকে শুনতে দেওয়া হয়নি। তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা বিশ্বব্যাপী যে স্বীকৃতি পেয়েছি তাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আমি বলব- মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে।

বক্তৃতাকালে তিনি বেগম জিয়ার ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার নম্বরপত্রের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, বেগম জিয়ার মত খালি অংক আর উর্দ্দুতে পাশ করলে চলবে না। সকল বিষয়েই উত্তীর্ণ হতে হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আমাদের সংস্কৃতি, সাহিত্য সবকিছুই পড়তে হবে। তিনি নিজেও বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী ছিলেন বলে এ সময় উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সব সময় মনে রাখতে হবে যে দেশকে আগামীতে নেতৃত্ব দিতে হলে শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ছাড়া কখনো নিজেকেও গড়ে তোলা যাবে না। দেশকেও এগিয়ে নেওয়া যাবে না। কাজেই ছাত্রলীগের যে মূলনীতি (শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি) সেই নীতি ধরেই এগুতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার আলোক বর্তিকা হাতে নিয়ে শান্তির পথে প্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের এটা খেয়াল রাখতে হবে যার যার নিজের বাড়িতে গেলে আশপাশে কেউ যদি নিরক্ষর থাকে তাহলে তাকে অক্ষর জ্ঞান দিতে হবে। সেই সাথে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীদের কাছে এটাই থাকবে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার অনুরোধ।

ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। আর ছাত্রলীগই হবে তার অগ্রসেনানী- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষমতা খালেদা জিয়ার নেই : প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  বলেছেন, এই ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্য করে বেগম জিয়া প্রমাণ করেছেন এই সেতু নির্মাণের কোনো ক্ষমতা তার নেই।

 

ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। আর ছাত্রলীগই হবে তার অগ্রসেনানী- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *